<Sri Yoga Center Kunarpur – Vedic Yoga, Indology & Cultural Research ="https://gmpg.org/xfn/11"> Sri Yoga Center Kunarpur – Vedic Yoga, Indology & Cultural Research Sri Yoga Center - Sri Yoga Center Ashram's Blog - Page 8

Light Fest of Bengal

শুভ দীপাবলী সবাই কে। ভারতবর্ষের পশ্চিম বঙ্গের গ্রামবাংলায় দীপান্বিতা কালীপূজা র দিনে প্রাকৃতিক পদ্ধতিতে সৃষ্ট আকাশ তুবড়ি ফাটানো হয়।একে বাংলায় মেড়াগাছ বা ইন্জলে পিন্জলেও বলা হয়ে থাকে।একটি খুব বড়ো লম্কবা টা বাঁশ নিয়ে তার উপর শুকনো তালপাতা নিয়ে একের পর এক সারিবদ্ধভাবে সাজিয়ে দ ঐ গাছের নিচে আগুন জালিয়ে দিলে একদম তুবড়ি র মতো দেখতে লাগে।এই আকাশ তুবড়িও এখন গ্রাম বাংলায় প্রায় বিরল হয়ে গেছে।

Peer review and ethical permission

Peer review is obviously important for research work. Is it always good for innovative work or any pioneering work ? There are potentiality to invent something which is unknown and its misuse. But is it right to stop brain’s curious nature or innovative nature in the name of “Ethical Permission” and “Peer Review”?
If the intention of the work is good ,further research is welcome.
Another issue is ‘internal negotiation’.When peer review is done in return of money ,how much & how long the honesty will be continued is a question.
On the other hand the “Predatory journals” are also a problem.
Innovation is always different from the usual path. We should feel its potentiality from our heart . For this type of works I will suggest to write book if they don’t have chance to publish in standard journal.
I would expect any suggestion regarding this .

টালা ওয়াটার ট্যাঙ্ক

শুধু ভারতবর্ষ নয়, পৃথিবীর বৃহত্তম ওভারহেড রিজার্ভার হলো কলকাতার ‘টালা ট্যাঙ্ক’। ঐতিহাসিক ‘টাইটানিক’ জাহাজ যে লোহা দিয়ে তৈরি হয়েছিল ‘টালা ট্যাঙ্ক’ তৈরি হতেও সেই রকম লোহা ব্যবহৃত হয়েছিল। তথ্য বলছে, টালা ট্যাঙ্ক নির্মাণের জন্য প্রায় ৮৫০০ টন লোহা লেগেছিল। যা ইংল্যান্ডের সুদূর ম্যাঞ্চেস্টার থেকে জাহাজে করে আনা হয়েছিল। মাটি থেকে ১১০ ফুট উঁচুতে অবস্থিত ওই ট্যাঙ্ক আক্ষরিক অর্থেই এক বিস্ময়! সল্টলেক স্টেডিয়ামের মাপ হল ২৮০ ফুট বাই ২৮০ ফুট। সেখানে টালা ট্যাঙ্কের দৈর্ঘ্য-প্রস্থের মাপ ৩২১ ফুট বাই ৩২১ ফুট! অর্থাৎ, ফুটবল মাঠের থেকেও আয়তনে বড় ওই জলাধার! ২১৫টি লোহার স্তম্ভের উপরে দাঁড়ানো ট্যাঙ্কটির উচ্চতা ২০ ফুট।
১৭১৭ সালে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি মোঘল সম্রাট ফারুকশিয়ার-এর কাছ থেকে ৩৮টি গ্রাম অধিগ্রহণ করেছিল। যার মধ্যে ৩টি ছিল বর্তমান কলকাতায়। আস্তে আস্তে কলকাতা যখন শহরে পরিবর্তিত হতে থাকলো এবং উন্নত থেকে উন্নততর হতে থাকলো তখন স্বাভাবিক ভাবেই প্রথম এবং প্রাথমিক কাজ হয়ে উঠলো নাগরিকদের সুস্থ পানীয় জল সরবরাহ করা। কারণ যেকোনো সুস্থ বসতি এবং জনজীবন গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে জলের গুরুত্ব সবার আগে। সেইসময় হেদুয়া, ভবানীপুর এবং ওয়েলিংটন এ পুকুর কেটে জল সরবরাহ শুরু করা হয়। এরপর শহর বড় হতে লাগলো, বড় হতে লাগলো জনজীবন, জনবসতি, তাই নাগরিকদের চাহিদা অনুযায়ী স্বাস্থকর জল সরবরাহ করার জন্য তত্‍কালীন পুর ইঞ্জিনিয়র মিস্টার ডেভেরাল একটি ট্যাঙ্ক ( রিজার্ভার) তৈরির প্রস্তাব দেন । প্রস্তাবটি তৈরি করেছিলেন তাঁর সহকারি মিস্টার পিয়ার্স । প্রস্তাবের সঙ্গে সহমত হয় বেঙ্গল গভর্নমেন্টও । ১৯০১ সালের প্রস্তাব কর্পোরেশন গ্রহণ করে ১৯০২ সালে । এর ঠিক এক বছর পর এই প্রস্তাবে সামান্য অদলবদল আনেন পৌরসভার নয়া নিযুক্ত ইঞ্জিনিয়র ডব্লু বি ম্যাকক্যাবে । তাতে প্রস্তাবিত অঙ্কের পরিমাণ বেড়ে হয় ৬৯ লক্ষ ১৭ হাজার ৮৭৪ টাকা । তবে আরও উন্নত জল পরিষেবা সম্ভব বলে তাতে সম্মতি দেয় পৌরসভা ।
এখন সমস্যা হলো এত বড় ট্যাঙ্ক তৈরি হবে কোথায়? আজ যেখানে ‘টালা ট্যাঙ্ক’ দাঁড়িয়ে আছে সেখানে এক কালে প্রচুর পুকুর ছিল, এই পুকুর ভরাট করে তৈরি করা হয়েছিল এই ট্যাঙ্কটি। এই ট্যাঙ্কের জায়গা অর্থাৎ ৪৮২ একর জমি দান করেছিলেন বাবু খেলাদ ঘোষ নামক এক ব্যক্তি। তাঁরই জমিতে তৈরি হয়েছিল প্রায় ১০ তলা বাড়ির সমান এই ট্যাঙ্ক। ১৯০৯ সালে তৎকালীন গভর্নর স্যার এডওয়ার্ড বেকার এই ট্যাঙ্কের শিলান্যাস করেন এবং ১৯১১ সালে নাগরিকদের জল সরবরাহ করার জন্য খুলে দেওয়া হয় এই ট্যাঙ্কটি।
আশ্চর্য্য বিষয় হলো পুরোপুরি কাঠের পাটাতন-এর উপর কোনো স্ক্রু ছাড়ার ৩২১ ফুট×৩২১ ফুট বর্গাকার এই বিশালাকার টাঙ্কটি এখনোও গর্বের সাথে মাথা উঁচু করে মানুষকে জল সরবরাহ করে যাচ্ছে। প্রথমে ‘টালা ট্যাঙ্ক’-এর ছাদটি ছিল চুনসুরকির। পরে ছাদে ১৪ ইঞ্চি পুরু কংক্রিটের ঢালাই দিয়ে তৈরি করা হয়। ‘টালা ট্যাঙ্ক’-এর ফাউন্ডেশন-এর কাজ করেছিল টি সি মুখার্জি এন্ড কোম্পানি এবং কংক্রিট ফাউন্ডেসন-এর কাজ করেছিল রাজেন্দ্রনাথ মুখার্জির মার্টিন এন্ড কোম্পানি, স্টিলের কাজ করেছিল ইংল্যান্ডের ক্লিটেনসন এন্ড কোম্পানি। পরে ছাদটি যখন কংক্রিটের তৈরি হয়েছিল তখন কাজ করেছিলেন আরাকন এন্ড কোম্পানি এবং বাবু কালীশঙ্কর মিত্তির। ১ লক্ষ ৩ হাজার ৪১ স্কোয়ারফিটের ৪ টি কম্পার্টমেন্ট যুক্ত এই বিশালাকার টাঙ্কটি খুবই বিচক্ষণতার সাথে এবং বুদ্ধি দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল যাতে ট্যাঙ্ক পরিষ্কার করতে গেলে কোনো ভাবে যেন জল সরবরাহ ব্যাহত না হয়। ৯০ লক্ষ গ্যালন জল ধরার ক্ষমতা রাখে এই বিশাল আকারের টাঙ্কটি। এর উচ্চতা ১৮ ফুট, কিন্তু জল থাকে ১৬ ফুট পর্যন্ত। উত্তরের দমদম থেকে দক্ষিনের ভবানীপুর পর্যন্ত এই জল আন্ডারগ্রাউন্ড পাইপের মাধ্যমে পৌঁছে যায় প্রতিটি কলকাতাবাসীর ঘরে। পলতায় গঙ্গা থেকে পরিশোধিত জল প্রায় ২২ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে ৬টি পাইপের মাধ্যমে টালায় পৌঁছায়। তা জমা হয় নীচের জলাধারে। সেখান থেকে ৬০ ইঞ্চি পাইপে সেই জল ওঠে মাটি থেকে প্রায় ১১০ ফুট উপরের ওই ট্যাঙ্কে। পৃথিবীর বৃহত্তম এই জলাধার এক সময়ে সারা কলকাতায় জল সরবরাহ করত। পরে গার্ডেনরিচ জলপ্রকল্প হওয়ায় টালার উপরে চাপ কিছুটা কমেছে।
এটাতো গেল ট্যাঙ্কের আকার নিয়ে বর্ণনা, কিন্তু তার সাথে এই ট্যাঙ্কটি এতটাই মজবুত যে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান যখন বোমা ফেলেছিলো তখনও ধ্বংস হয়নি। শুধু মাত্র ৯ টা ছিদ্র হয়েছিল। প্রচুর বড় বড় ভূমিকম্প এসেছে কিন্তু কোনো ক্ষতিই হয়নি ‘টালা ট্যাঙ্ক’-এর। এই বিশালাকার ট্যাঙ্ককে ক্ষতি করতে পারলে কলকাতাকে কব্জা করা যাবে এই চিন্তা নিয়ে ১৯৬২, ১৯৭১-এর যুদ্ধে চীন ও পাকিস্তানের কাছে সব থেকে বড় টার্গেট পয়েন্ট ছিলো ‘টালা ট্যাঙ্ক’। কারণ পানীয় জল ব্যতীত মানুষের জীবন অচল। কিন্তু এই সমস্ত বাধা এবং প্রতিকূলতাকে দূরে ঠেলে আজও আমাদের বাঙালির তথা বিশ্ব-এর গর্ব হয়ে রয়ে গেছে এই ‘টালা ট্যাঙ্ক’।
অতি সম্প্রতি প্রায় ঘণ্টায় ১৩০ কিলোমিটার বেগে আসা আমফানে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারতো শতাব্দী প্রাচীন টালা ট্যাঙ্ক। এই ভয় কাজ করেছিল পুর আধিকারিকদের মনে। কারণ, মেরামতির কাজ সম্পূর্ণ হয়নি। বিগত ১০০ বছরে এত বড় রকমের ঝড়ের কোনো অভিজ্ঞতাও নেই কারোর। দুপুরের পর থেকে আবহাওয়ার পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে দেখে শুধুমাত্র মেয়রকে জানিয়েই টালা ট্যাঙ্কের দায়িত্বে থাকা আধিকারিক দ্রুত একটি সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন। আর সেই সিদ্ধান্তেই কেল্লা ফতে হয়েছে বলে মনে করছেন তাঁরা।
এমনিতে হাইড্রোলিক সিস্টেম এ টালা ট্যাঙ্ক থেকে অবিরাম পদ্ধতিতে অনবরত জল ওঠানামা করে। কখনোই ট্যাঙ্কে জল দাঁড়িয়ে থাকে না। কিন্তু দুপুরের পর পরিস্থিতি দেখে আধিকারিকরা সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন, বিকেল পাঁচটা থেকে রাত্রি পর্যন্ত কোন জল নামতে দেওয়া যাবে না। দ্রুত চাবি বন্ধ করে জল নামা বন্ধ করে দেওয়া হয়। টালার ট্যাঙ্কে জল ধরার ক্ষমতা ৯০ লক্ষ গ্যালন। ৮০ লক্ষ গ্যালন জল দ্রুত পূর্ণ করে ফেলা হয় ট্যাঙ্কের চারটি প্রকোষ্ঠে। জল-সহ গোটা ট্যাঙ্কের ওজন দাঁড়ায় ৮৫ হাজার মেট্রিক টন। যাকে এক চুলও নড়ানো ক্ষমতা আমফানের ছিলো না বলে মত বিশেষজ্ঞদের। কিন্তু একটা পরীক্ষা হয়ে গেল এর মধ্যে দিয়ে। আগামী আরও ১০০ বছরের জন্য সুরক্ষিত টালা ট্যাঙ্ক। আমফানই যেন সিলমোহর দিয়ে গেল!
আজও একভাবে জলের মাধ্যমে জীবন দান করে চলেছে কলকাতার প্রায় প্রতিটি ঘরে।
সংকলন ও লিখন – #রূপকথা_রায়
পুনঃপ্রকাশ
সংগৃহীত