অনেক বাড়িতেই ছোটবেলা থেকে শেখানো হয়—“খাওয়ার সময় কথা বলিস না”। অনেকেই এটাকে নিছক কুসংস্কার বা বাড়াবাড়ি নিয়ম বলে মনে করেন। কিন্তু বাস্তবে এই নিয়মের পেছনে আছে স্বাস্থ্য, শিষ্টাচার এবং মনস্তাত্ত্বিক কিছু গুরুত্বপূর্ণ কারণ।
এই নিয়মটি আসলে মানুষকে ভয় দেখানোর জন্য নয়, বরং সুস্থ ও সচেতনভাবে খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য তৈরি হয়েছিল।
হজম প্রক্রিয়ার সঙ্গে সম্পর্ক
খাবার খাওয়ার সময় আমাদের শরীর সম্পূর্ণভাবে হজম প্রক্রিয়ায় মনোযোগ দেয়।
এই সময় বেশি কথা বললে—
খাবার ঠিকভাবে চিবানো হয় না,
মুখে অতিরিক্ত বাতাস ঢুকে যায়,
বদহজম, গ্যাস বা অস্বস্তি তৈরি হয়। আগেকার মানুষ এগুলো বৈজ্ঞানিক ভাষায় না বুঝলেও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে বুঝেছিলেন যে চুপচাপ, মন দিয়ে খেলে শরীর ভালো থাকে।
শ্বাস ও গিলবার স্বাভাবিক ছন্দ নষ্ট হয়
খাওয়া ও কথা বলা—দুটোই মুখ ও শ্বাসনালীর সঙ্গে যুক্ত।
একসাথে দুটো করলে—
খাবার গলায় আটকে যাওয়ার ঝুঁকি,
কাশির সমস্যা,
শিশুদের ক্ষেত্রে শ্বাসনালিতে খাবার যাওয়ার আশঙ্কা এই কারণেই বড়রা খাবারের সময় নীরব থাকতে বলতেন।
মনোযোগ দিয়ে খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করা
খাবার শুধু পেট ভরানোর বিষয় নয়, এটি শরীরের জন্য জ্বালানি।
খাওয়ার সময় কথা বললে—
কতটা খাওয়া হচ্ছে তার হিসেব থাকে না,
বেশি বা কম খাওয়া হয়,
তৃপ্তির অনুভূতি কমে যায়।
এই নিয়ম মানুষকে mindful eating শেখাত, যদিও তখন এই শব্দটি ব্যবহৃত হতো না।
সামাজিক শিষ্টাচার শেখানোর উপায়
আগেকার দিনে একসাথে বসে খাওয়া ছিল পারিবারিক শৃঙ্খলার অংশ।
খাওয়ার সময় অতিরিক্ত কথা বলা মানে—
খাবারের প্রতি অসম্মান,
অন্যদের অস্বস্তি,
বিশৃঙ্খল পরিবেশ,
এই নিয়মটি আসলে মানুষকে ভদ্রতা ও সংযম শেখাত।
শিশুদের নিরাপত্তার বিষয়
বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এই নিয়ম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
খাওয়ার সময় কথা বললে শিশুর—
খাবার গলায় আটকে যাওয়া,
হঠাৎ কাশি বা দম বন্ধ হওয়ার ঝুঁকি,
এই ঝুঁকি কমাতেই বড়রা কড়া ভাবে এই নিয়ম মানাতে চাইতেন।
“খাবার খাওয়ার সময় কথা বলো না”—এই কথাটি কুসংস্কার নয়।
এটি আসলে—
স্বাস্থ্য সচেতনতা,
হজমের সুরক্ষা,
সামাজিক শিষ্টাচার,
শিশুদের নিরাপত্তা।
এই চারটি বিষয়কে একসাথে ধরে রাখার একটি সহজ নিয়ম।
আগের প্রজন্ম বিজ্ঞানের ভাষা জানত না, কিন্তু জীবনের অভিজ্ঞতা থেকেই তারা এই নিয়মগুলো তৈরি করেছিল—যা আজও প্রাসঙ্গিক।
নিজের সংস্কৃতি নিজের ঘর।
চোখ রাখুন ব্লগে “শ্রীডক্টর”।
About Sri Yoga Center: A charitable trust in Kunarpur, Bankura devoted to Yoga, Ayurveda, Indology, and cultural research.
Know more •
Official Blog •
YouTube


