শ্রীমার দীক্ষা দান

Spread the love

🌹🌹🌹🌹🌹 স্মৃতির সরণি বেয়ে 🌹🌹🌹🌹🌹

 

( ৫৪ )

 

শ্রীশ্রীমা-কে প্রথম দর্শন করি ১৯১৩ খ্রীঃ জয়রামবাটীতে । আমার বয়স তখন তের চৌদ্দ । শিলং হইতে দুই-তিনজন ভক্তের সহিত আসিয়াছি, মা-কে প্রণাম করিতেই মা চিবুক স্পর্শ করিয়া চুমো খাইলেন এবং মাথায় গায়ে হাত রাখিয়া আশীর্বাদ করিলেন ।

পরদিন সকাল ৯টা । জয়রামবাটী গ্রামটি ঘুরিয়া দেখিতেছি । একজন হাঁপাইতে হাঁপাইতে আসিয়া বলিল, “তুমি এখানে কি করছ ? মা ডাকছেন, শিগগির এস ।” মায়ের কাছে যাইতেই জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি বাবা, তুমি মন্ত্র নেবে ?”

অপ্রত্যাশিত এই আহ্বানে আমি বিস্মিত, দীক্ষা লইবার কোন কল্পনা আমার ছিল না । জয়রামবাটী গিয়াছিলাম শ্রীশ্রীমা কেমন ——- তাহা দেখিবার জন্য । তাই আশ্চর্য ও উৎফুল্ল হইলাম । মুখে কথা ফুটিল না, বুক কাঁপিতে লাগিল । আমাকে নির্বাক দেখিয়া মা বলিলেন, “যাও, শিগগির স্নান করে এস, আমি অপেক্ষা করব ।”

কলুপুকুরে একটা ডুব দিয়া আসিলাম । মা তাঁর পাশের একটি আসনে আমাকে বসিতে বলিলেন । মা আমার জন্য নির্ণীত মন্ত্রটি কয়েকবার উচ্চারণ করিয়া আঙুলে গণনা রাখিবার পদ্ধতিটি দেখাইয়া দিলেন । ঠিকমতো বুঝিয়াছি কিনা ——– বোধহয় সে বিষয়ে নিঃসন্দেহ হইবার জন্য আমাকে জপ করিতে বলিলেন ।

এরপর কয়েকটি ফল হাতে দিয়া বলিলেন, “ওগুলি আমার হাতে দাও । দক্ষিণা দিতে হয় ।” আদেশ পালন করিলে বলিলেন, “এখন পা ছুঁয়ে প্রণাম কর ।” আবেগে শ্রীচরণে মাথা রাখিয়া প্রণাম করিয়া উঠিতেই বলিলেন, “একটু দাঁড়াও ।” ঘরের উত্তর পশ্চিম কোণে শিকায় ঝুলানো হাঁড়ি হইতে দুইটি মোয়া বাহির করিয়া স্বয়ং দাঁতে কাটিয়া একটু খাইলেন । ঐ মোয়া দুটি আমার হাতে দিয়া বলিলেন, “এখানে দাঁড়িয়ে খেয়ে নাও ।”

এই আমার প্রথমবার দীক্ষা । আমার কিশোর জীবনের অভাবনীয় ঘটনা । অহেতুকী কৃপার কথা শুনিয়াছি ——– ইহা কি তাই ? কাচ কুড়াইতে গিয়া পরশমণি পাইলাম । কোন অনুরোধ বা প্রার্থনা করিতে হইল না । করুণাময়ী জননী কৃপা করিয়া ডাকিয়া দীক্ষা দান করিলেন ।

 

———— শ্রীঅমূল্যকৃষ্ণ ঘোষ ।

 

( উদ্বোধন : ৬৫ বর্ষ ১১ সংখ্যা )

 

🌹🌹🌹🌹🌹🌹 জয় মা 🌹🌹🌹🌹🌹🌹

(সংগৃহিত))

Published by Shruti Adhya Kundu  marketing officer of SYCN

 

 


Spread the love