🌿🌿ঠাকুর শ্রীরামকৃষ্ণ এবং স্বামীজীর কাহিনী🌿🌿

মহাশক্তির জাগরণ।
তিনশো চুয়াত্তরতম পর্ব।

আজকের নিবেদন–ঠাকুর ও স্বামীজী।
আজ দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব।

ওগো ঠাকুর,
তোমার চোখে জল দেখে স্বামীজী তখন ভাষাহীন
হ’য়ে গিয়েছেন। তাঁর সারা শরীর ঘামে ভিজে
গিয়েছে। এবার শুরু হোলো কাঁপুনি–!
স্বামীজী কাঁপছেন। ভয়ে নয়, আত্মগ্লানিতে!
স্বামীজী সেদিন শুধু কাঁদেন নি। তাঁর মনে
আত্মগ্লানি জেগেছিল।
তিনি ওখানে দীক্ষা নেবেন না ব’লে ঠিক করলেন।
দীক্ষার দিন স্হগিত থাকলো। তবু তাঁর মনের
দ্বন্দ্ব দূর হোলো না।

ঐ ঘটনার দুদিন পরে পওহারী বাবার কাছে
দীক্ষা নেবার জন্য স্বামীজীর মন আবার ব্যাকুল
হ’য়ে উঠলো!
এবারও স্বামীজীকে তুমি দর্শন দিলে ঠাকুর!
তবে সেইরাতে এমন কিছু ঘটেছিল যা স্বামীজী
কখনো কারো কাছে প্রকাশ করেন নি।
এভাবে পাঁচ-ছয়বার ঠাকুরের দর্শন পাবার পর
সেখানে দীক্ষা নেবার ইচ্ছা চিরতরে হারিয়ে
গেল স্বামীজীর মন থেকে।
তাঁর মনে ঠাকুর ছাড়া আর কারও প্রবেশের
অবকাশ রইলো না।

স্বামীজী আবার ঠাকুরকে দেখেছিলেন। অদ্ভুত,
অলৌকিক সে ঘটনা। বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে যোগ
দিতে যাবার আগে একদিন তিনি অর্ধনিদ্রিত
অবস্হায় শুয়ে আছেন; তখন দেখলেন তাঁর
সামনে দিগন্তবিস্তৃত সমুদ্র–; ঠাকুর সমুদ্রে
নাবলেন! তারপর জলের ওপর দিয়ে হাঁটতে
হাঁটতে ওপারে পৌঁছে গেলেন। ইশারায়
তাঁকে অনুসরণ করবার নির্দেশ দিলেন ঠাকুর।

এক অনাবিল শান্তিতে ভ’রে উঠলো স্বামীজীর
মন। কানে বেজে উঠলো ঠাকুরের বাণী–“যাও–!”

আর তারপরের ঘটনা আমাদের সকলেরই জানা, এবং তা চিরতরে এক পরম গৌরবের ইতিহাস রচনা করেছে।

  • ((সংগৃহীত)) 
  • published by SHRUTI ADHYA KUNDU MARKETING OFFICER OF SYCN.

🌺🌿🌺স্বামীজীর বাণী🌺🌿🌺

।। কর্মরহস্য ।।

মনে কর, একজন পুরুষ একটি মেয়েকে ভালবাসে। সে একাই তাহাকে পরিপূর্ণভাবে ভোগ করিতে চায় ; তাহার প্রতিটি গতিবিধি সম্বন্ধে পুরুষটির মনে ঈর্ষার উদয় হয়। সে চায় — মেয়েটি তাহার কাছে বসুক, তাহার কাছে দাঁড়াক, তাহার ইঙ্গিতে খাওয়া-দাওয়া, চলা-ফেরা প্রভৃতি সব করুক।

সে ঐ মেয়েটির ক্রীতদাস, এবং মেয়েটিকেও নিজের দাসী করিয়া রাখিতে চায়। ইহা ভালবাসা নয়, ইহা একপ্রকার দাসসুলভ অনুরাগের বিকার। ভালবাসার মতো দেখাইতেছে, বস্তুতঃ ইহা ভালবাসা নয়।

উহা ভালবাসা হইতে পারে না, কারণ উহা যন্ত্রণাদায়ক। যদি মেয়েটি তাহার ইচ্ছা অনুযায়ী কাজ না করে, তবে তাহার কষ্ট হইবে। ভালবাসায় কোন দুঃখকর প্রতিক্রিয়া নাই। ভালবাসার প্রতিক্রিয়ায় কেবল আনন্দই হইয়া থাকে।

ভালবাসিয়া যদি আনন্দ না হয়, তবে উহা ভালবাসা নয় ; অন্য কিছুকে আমরা ভালবাসা বলিয়া ভুল করিতেছি।

যখন তুমি তোমার স্বামীকে, স্ত্রীকে, পুত্রকন্যাকে, সমুদয় পৃথিবীকে, বিশ্বজগৎকে এমনভাবে ভালবাসিতে সমর্থ হইবে যে, তাহাতে কোনরূপ দুঃখ ঈর্ষা বা স্বার্থপরতার প্রতিক্রিয়া হইবে না, তখনই তুমি প্রকৃতপক্ষে অনাসক্ত হইতে পারিবে।

(স্বামীজীর বাণী ও রচনা – ১ম খণ্ড – পৃষ্ঠা – ৬৩)

TAKEN FROM FACEBOOK

Published by SHRUTI ADHYA KUNDU MARKETING OFFICER OF SYCN.

 

 

স্বামীজীর কথা:

স্বামীজীর কথা। স্বামী অভেদানন্দ (কালী বেদান্তী)।

একবার বিহারের গয়া জেলার অন্তর্গত বরাবর পাহাড়ে হঠযােগীর কাছে যাই।

 

বিজয়কৃষ্ণ গােস্বামী একদিন কাশীপুরের বাগানে

সন্ন্যাসি বেশে অর্থাৎ মুণ্ডিতমস্তকে ও কমণ্ডলুহস্তে এসে আমাদের বলেন যে, গয়াধামের কাছে বরাবর পাহাড়ের একটি গুহায় একজন সিদ্ধ হঠযােগীকে দেখে এলাম। শুনে তখনি আমার একান্ত ইচ্ছা হলাে সেই হঠযােগীকে দেখবার। সুতরাং গেলাম বরাবর পাহাড়ে।

 

সকলকে জিজ্ঞাসা করতে করতে খালিপায়ে জঙ্গলাকীর্ণ রাস্তা দিয়ে চলতে লাগলাম বরাবর পাহাড়ের দিকে।

 

অবশেষে হাজির হলাম একটি ছােট্ট গ্রামে। গ্রামটি ছিল পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত। ঐ গ্রামের শিবমন্দিরে একটি ধর্মশালা ছিল। আমি হঠযােগী সাধুর কাছ থেকে ফেরার সময়ে ঐ ধর্মশালায় রাত্রিযাপন করলাম।

 

সৌভাগ্যের বিষয় যে, সেখানে তখন একজন ‘পুরী’

নামা দশনামী সন্ন্যাসী আমার মতাে রাত্রিযাপন করার জন্য আশ্রয় নিয়েছিলেন। দুজনে একসঙ্গে থাকায় রাত্রে তাঁর সঙ্গে বেশ পরিচয় হলাে।

 

পরিচয়ে জানলাম তাঁর কাছে সন্ন্যাসপদ্ধতি ও বিরজাহােমের একটি পুঁথি ছিল। আমি তাঁকে অনুরােধ করলাম তাঁর পুঁথি থেকে সন্ন্যাসের পদ্ধতি ও বিরজাহােমের মন্ত্র লিখে নেব। তিনি সম্মত হলেন।

 

সুতরাং তাঁর কাছ থেকে পুঁথিটি সংগ্রহ করে আমার কাছে যে-খাতা ছিল তাতে সেই পুঁথি থেকে বিরজাহােমের মন্ত্রগুলি, প্ৰেষমন্ত্র, মঠ, মড়ি, যােগপট্ট যাবতীয় বিষয় লিখে নিলাম। তারপর ভাের হলে ‘পুরী’ নামা সাধুকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁর কাছ থেকে বিদায় নিলাম।

 

এসমস্তই শ্রীশ্রীঠাকুরের ইচ্ছা ও আশীর্বাদ। ঐ বিরজাহােমের খাতার মন্ত্র ও নির্দেশগুলিই বরানগর মঠে যখন সন্ন্যাসের অনুষ্ঠান হয় তখন কাজে লাগে। বরানগর মঠে সন্ন্যাস অনুষ্ঠানের সময়ে আমিই তন্ত্রধারকের কাজ করেছিলাম স্বামীজীর আদেশে।

 

শ্রীশ্রীঠাকুর আমাদের এগারজনকে সন্ন্যাস বহুপূর্বেই দিয়েছিলেন। মুরুব্বি গােপাল-দাদা (স্বামী অদ্বৈতানন্দ) স্বেচ্ছায় গঙ্গাসাগরযাত্রী সাধুদের গেরুয়াবস্ত্র দান করতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। অন্তর্যামী শ্রীশ্রীঠাকুর তা জানতে পেরে গােপাল-দাদাকে ডেকে বলেনঃ “গেরুয়া কাপড়

কিসের জন্য করা হচ্ছে?” গােপাল-দাদা বললেনঃ

“জগন্নাথঘাটে গঙ্গাসাগরমেলায় যাওয়ার জন্য যে সাধুরা এসেছেন তাদের দেব স্থির করেছি।”

 

শ্রীশ্রীঠাকুর হেসে বললেনঃ “তুই আমার সন্তানদের দে, এরা এক-একজন হাজারী সাধু, এদের দিলে তাের হাজারগুণ ফল হবে।”

 

গােপাল-দাদা শ্রীশ্রীঠাকুরের কথায় সম্মত হয়েছিলেন। তখন এগারটি রুদ্রাক্ষের মালা ও এগারখানি গেরুয়া কাপড় ঠাকুরের এগারজন সন্তানকে তিনি দান করেন।

 

রুদ্রাক্ষের মালা ও গেরুয়া কাপড় পেয়ে আমরা তখনি শ্রীশ্রীঠাকুরকে প্রণাম করে এসে গৈরিকবস্ত্র ও মালা পরলাম। শ্রীশ্রীঠাকুর আমাদের আশীর্বাদ করলেন।

 

স্বামীজী আমায় কী ভালই না বাসতেন! স্বামীজীর

বিরাট ব্যক্তিত্ব ও তাঁর পাশ্চাত্যে সাফল্যময় কর্মপদ্ধতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্যই তাে আমার ‘বিবেকানন্দ অ্যান্ড হিজ ওয়ার্ক’ বইটি লেখা। স্বামীজী যে কত বড় ছিলেন, কত মহান ছিলেন, তাঁর সঙ্গে আমার সম্পর্ক ছিল যে কী নিবিড় ও কত মধুর —তা আর অপরে কি করে বুঝবে! শুধু বাইরের আড়ম্বরই সবকিছু নয়, প্রাণে প্রাণে সম্বন্ধটাই আসল।

 

স্বামীজীকে আমি অন্তর দিয়ে যেমনটি দেখেছি ও

বুঝেছি, তেমনটি গ্রন্থে প্রকাশ করেছি। শ্রীশ্রীঠাকুর আমাদের সকলের ভার স্বামীজীকে দিয়ে গিয়েছিলেন।

 

তিনি বলেছিলেনঃ “নরেন, এদের তুই দেখবি।” তাই

স্বামীজী ছিলেন আমাদের কেন্দ্ৰাধিপতি। তিনি (স্বামীজী) আমায় ডেকে পাঠালেন লন্ডনে। শরৎ

মহারাজ (স্বামী সারদানন্দ) তার পূর্বেই উপস্থিত হয়েছিলেন লন্ডনে।

 

আমি লন্ডনে পৌঁছালে রুমসবেরী স্কোয়ারে খ্রীস্ট থিয়ােসফিক্যাল সােসাইটির হল-এ স্বামীজী একদিন আমার লেকচারের ব্যবস্থা করেছিলেন। আসলে ঠিক ছিল স্বামীজী নিজেই বক্তৃতা দেবেন, কিন্তু তাঁর মনে মনে সঙ্কল্প ছিল অন্যরকম। ২৭ অক্টোবর ১৮৯৬ খ্রীস্টাব্দ। সেদিন আগে থেকে ডেকে আমায় বললেনঃ “তােমাকে সােসাইটি হল-এ আজ বক্তৃতা দিতে হবে।” আমি তাে শুনে অবাক। সােজাসুজি বক্তৃতা দিতে অস্বীকার করেই বসলাম।

বললামঃ “জান তাে, পাবলিকের সামনে বক্তৃতা আমি কোনদিনই করিনি।” স্বামীজী বললেনঃ “তা আমি জানি, কিন্তু শ্রীশ্রীঠাকুরকে স্মরণ করে তৈরি হও।” তবুও আমি ঘাের আপত্তি জানালাম। কিন্তু তখন আর আমার আপত্তি শোনে কে? তিনি আমার কোন কথায়ই কান দিলেন না।

 

আমি তখন যে কী বিপদে পড়েছিলাম তা এক শ্রীশ্রীঠাকুরই জানেন! আমার অসহায় অবস্থা দেখে স্বামীজী বললেনঃ

“যার নাম সম্বল করে আমরা ঘরবাড়ি ছেড়েছি, তাঁকে স্মরণ করে যা মনে আসবে তাই দু-চার কথা বলবে। চিন্তার কি কারণ আছে?” আমি বললামঃ “সে তাে তােমার কাছে অতি সহজ কথা। আমি কিন্তু তা পারব না।”

 

স্বামীজী কিন্তু শােনবার পাত্র ছিলেন না। তিনি দৃঢ়ভাবে অথচ স্নেহপূর্ণ হাস্যে বললেনঃ “তা হয় না। আমি তােমার নাম অ্যানাউন্স (ঘােষণা) করে দেব, এখন থেকে তৈরি হও।” এই বলে তিনি চলে গেলেন।

 

পাশ্চাত্যদেশে আমায় বক্তৃতা দিতে হবে তা আমি

জানতাম, কিন্তু এত শীঘ্র যে সম্মুখসমরে দাঁড়াতে হবে, তার জন্য আমি মােটেই প্রস্তুত ছিলাম না। তাই অনবরত একদিকে চিন্তা করতে লাগলাম স্বামীজীর অদ্ভুত কাণ্ড-কারখানার কথা, আর অন্যদিকে করুণাময় শ্রীশ্রীঠাকুরের কথা। গত্যন্তর কিছু না দেখে অবশেষে মােটামুটি একটা সাবজেক্ট ঠিক করে রাখাই শ্রেয় মনে করলাম।

 

জানতাম যে, স্বামীজী যখন বলেছেন, তখন তার কথার নড়চড় কখনই হবে না। অগত্যা বৈকালে হাজির হলাম খ্রীস্টথিয়ােসফিক্যাল সােসাইটির হল-এ। তখনাে পর্যন্ত লােকে জানত যে, স্বামীজীই বক্তৃতা দেবেন। বহু বিশিষ্ট শ্রোতাদের সমাগম হয়েছিল। বক্তৃতার নির্দিষ্ট সময়ের কিছু পূর্বে স্বামীজী তাঁর সঙ্কল্প কাজে পরিণত করলেন।

 

তিনি উঠে শ্রোতাদের উদ্দেশ্য করে বললেনঃ “মাননীয় শ্রোতৃবৃন্দ আমার প্রিয় ও সুপণ্ডিত গুরুভ্রাতা স্বামী অভেদানন্দ সবে মাত্র এসেছেন ভারতবর্ষ থেকে আপনাদের জন্য শুভেচ্ছা নিয়ে, তিনিই আজ আপনাদের বেদান্ত সম্বন্ধে কিছু বলবেন।” শােনামাত্র আমার মাথায় যেন আকাশ ভেঙে পড়ল। একটা বিদ্যুৎপ্রবাহ যেন সমগ্র শরীরে আলােড়ন সৃষ্টি করল।

 

স্বামীজীর অ্যানাউন্সমেন্ট (ঘােষণা) শুনে শ্রোতৃবর্গ আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে ঘন ঘন করতালি দিতে লাগলেন। অগত্যা উঠে দাঁড়ালাম ডায়াসে। শ্রীশ্রীঠাকুরের জ্যোতির্ময় ও কল্যাণময় প্রসন্নমূর্তি যেন অকস্মাৎ আমার চোখের সামনে ভেসে উঠল। ঠিক করেছিলাম ‘পঞ্চদশী’ (‘পঞ্চদশী’র দার্শনিক মতবাদ) সম্বন্ধে কিছু বলব।

 

শ্রীশ্রীঠাকুর ও স্বামীজীকে স্মরণ করে ‘পঞ্চদশী’* গ্রন্থের দার্শনিক মতবাদ সম্বন্ধে অনর্গল বলে যেতে লাগলাম, নিজে বুঝতে পারছিলাম না যে, কি আমি বলছি। তবে মনে হচ্ছিল, শ্রীশ্রীঠাকুরই যেন আমার মুখ দিয়ে বলে যাচ্ছিলেন অনর্গল অবিশ্রান্তভাবে। করুণাময় শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রেজেন্স (উপস্থিতি) তখন প্রত্যক্ষভাবে আমি অনুভব করেছিলাম। সমগ্র হলটা তখন নিঃস্তব্ধতায় ভরে উঠেছিল।

 

ঘণ্টাখানেক বলার পর যখন আমি বক্তৃতা শেষ করলাম, তখন হল-এর একদিক থেকে অন্যদিক পর্যন্ত শ্রোতাদের মুহুর্মুহু করতালি-ধ্বনি যেন উত্তাল সমুদ্রের এক তরঙ্গ সৃষ্টি করেছিল। স্বামীজীকেও বিপুল আনন্দে করতালি দিতে দেখেছিলাম। তিনি এগিয়ে এসে সস্নেহে আমায় জড়িয়ে ধরলেন। গােড়ার দিকে একবার স্বামীজীকে হঠাৎ ঘাড় নাড়তে দেখে ভেবেছিলাম বুঝি বক্তৃতায় আমার কোন ত্রুটি হচ্ছে, কিন্তু পরে বুঝলাম তা নয়।

তিনি ওভাবে আমার বক্তৃতা উপভােগ করেছিলেন। সমবেত শ্রোতারা আমার বক্তৃতা ভালভাবে অ্যাপ্রিসিয়েট (সমাদর) করেছিলেন।

 

তখন মনে হলাে শ্রীশ্রীঠাকুরের অনন্ত কৃপা ও অফুরন্ত করুণার কথা! প্রত্যক্ষ করলাম স্বামীজীর অহেতুক একান্ত ভালবাসার নিদর্শন। সত্যিই দেখেছিলাম সেদিন গুরু-ভাইয়ের কৃতকার্যতায় গুরুভাইয়ের কী গৌরব, ভালবাসা ও আত্মগরিমার ভাব!

 

স্বামীজীকে যেমন ভালবাসতাম ও শ্রদ্ধা করতাম,

তেমনি যুক্তির দিক থেকে আবার তাঁর সঙ্গে তর্ক-বিতর্ক করতেও ছাড়তাম না। মতের অমিলও হতাে কোন কোন সময়ে কোন কোন বিষয় নিয়ে, কিন্তু সেই অমিলের পিছনে থাকত না আত্মগরিমা ও প্রশংসালাভের বিন্দুমাত্র প্রবৃত্তি, থাকত ভালবাসার ও শ্রদ্ধাবনতির ভাব।

শ্রীরামকৃষ্ণ বেদান্ত মঠ প্রকাশিত স্বামী প্রজ্ঞানানন্দের ‘মন ও মানুষ’ গ্রন্থের ১ম ভাগের ২য় সংস্করণ (১৯৮১, পৃঃ ১৬৩-১৭৪)

থেকে সঙ্কলিত। ও সংকলনঃ নারায়ণচন্দ্র গুহরায়।

*পঞ্চদশী শাঙ্কর-বেদান্তের একটি বহুসমাদৃত প্রামাণিক গ্রন্থ। মাধবাচার্য বা বিদ্যারণ্য স্বামী এর রচয়িতা। ভাষার সরলতা, যুক্তির স্বচ্ছতা এবং

বহুল পরিমাণ উদ্ধৃতির সাহায্যে দুর্বোধ্য তত্ত্বের প্রাঞ্জল ও সরস ব্যাখ্যার নিরিখে বিচার করলে এই বৃহৎ কলেবর গ্রন্থের অনন্যতা বুঝতে পারা যাবে। অদ্বৈত বেদান্তের মূল তত্ত্বগুলির সবিশদ আলােচনা এতে সন্নিবিষ্ট হয়েছে।

উদ্বোধন সূত্রে সংগৃহীত।

TAKEN FROM FACEBOOK

Published by Shruti Adhya Kundu marketing officer of SYCN.
Continue reading “স্বামীজীর কথা:”