🌺🌿🌺 শ্রীমার লীলা🌺🌿🌺

সংগৃহীত।

|| ঘটন না অঘটন? ||
…………………………….

এক সাধুর মুখে শুনেছি, একটি সবজিওলা বর্ধমান স্টেশনে বসে ছিল, লোকাল ট্রেনে মাল নিয়ে কলকাতা আসবে বলে। মাল বলতে বিশেষ কিছু ছিল না সেদিনঘটন না অঘটন? – গজেন্দ্রকুমার মিত্র, কিছু শাক ছিল মাত্র। তার মধ্যে কচি চড়ুই শাক বা চাঁপানটেই প্রধান। পাশে বসে ছিলেন বৃদ্ধামতো মহিলা, পাড়াগাঁয়ে সদাকুণ্ঠিত জড়োসড়ো গোছের বয়স্কা একটি মেয়েছেলে। তিনি বারবারই সেই শাকগুলিতে হাত বুলিয়ে দেখতে লাগলেন, যেন স্পর্শেই ওদের স্বাদ অনুভব করছেন,আর মুখে বলতে লাগলেন:”বা: বা:, অনেকদিন এমন টাটকা শাক দেখি নি বাবা,তা যা বলব!”

বুড়ির রকমসকম দেখে মায়া হলো শাকওলার। বললে: “তা নাও না বুড়ি-মা, দু আঁটি তিন আঁটি-যা ইচ্ছে! স্বছন্দে নাও, পয়সা লাগবে না।”
মহিলা মাথা নেড়ে বললেন : “না বাবা, এখন নিতে পারব না। এখন ঘরকে যাচ্ছি না।”
তারপর একটু থেমে বললেন : “তুমি কোথায় যাবে বললে? শ্যামবাজারে যাও শাক বেচতে? তা বাবা যদি তোমার দয়া হয়, একদিন বরং আমার ঘরে দু-আঁটি শাক ফেলে দিয়ে এসো। যেদিন বাঁচবে-টাঁচবে-”
“আমি ঠিকানা পাব কোথায়?”
“কিছু না, শ্যামবাজারের বাজার থেকে বেরিয়ে একটু উওরে-বাগবাজার,সেই মুখে যেয়ে জিজ্ঞাসা করো, মার বাড়িটা কোথায়,কেউ না কেউ দেখিয়ে দেবেই-”
তা গিছল সে লোকটি। বাজারে যাবার আগেই গিছল। আলাদা করে চাঁপানটে একটা ছেঁড়া কাপড়ে বেঁধে নিয়ে। বাড়ি খুঁজে বের করতেও কোনো অসুবিধে হয়নি। কিন্তু মুশকিল হলো-লোকটি যখন বলল: “এই ঠিকানায় একটি বুড়ীমতো মেয়েছেলে থাকে, আমাকে বলেছেন একটু লটে শাক দিয়ে যেতে-তাই আমি এনেছি।”
সেটা আসলে মঠ, সাধুরা থাকেন। তাঁরা তো অবাক। “না বাপু, এখানে কেনো মেয়েছেলেটেলে থাকে না। দেখতে পাচ্ছ তো সাধুদের আস্তানা-এখানে মেয়েছেলে থাকবেই বা কেন? নিশ্চয় তোমার ভুল হয়েছে।”
তবু লোকটি বারবারই বলতে লাগল: “না, সে বুড়ী-মা আমাকে অনেক করে বলেছেন যে-”
বলতে বলতেই নজড়ে পড়ল, সিঁড়ির বাঁকে বিশ্বজননী সারদামণির নানা বয়সের ছবি-এক ফেমেই বাঁধানো-সে বলে উঠল: “বা: রে! এই তো। এই বুড়ী-মাই তো আমাকে লটে শাকের কথা বলেছেল- আপনারা বলছ তিনি এখানে থাকে না!”
সাধুরা তো অবাক! মাগো, তোমার দুটো শাক খাবার ইচ্ছে হয়েছিল তো আমাদের বলোনি কেন!

– গজেন্দ্র কুমার মিত্র

(ঘটনাটি মায়ের মহানিষ্ক্রমণেরও বহুদিন/ বছর বাদে ঘটেছিল।)

TAKEN FROM FACEBOOK

PUBLISHED BY SHRUTI ADHYA KUNDU MARKETING OFFICER OF SYCN.