[1/30, 8:54 PM] +91 94334 54935: 🌺 *শুভ রটন্তী কালীপূজা তিথি।*
৩০শে জানুয়ারি, ২০২২🌺
———————————————–
*চান্দ্রমাস অনুযায়ী রটন্তী কালী পূজার তিথি টি হচ্ছে পৌষ কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথি।*
এই তিথিতেই আবির্ভাব মা ছিন্নমস্তার এবং বগলামুখী মায়েরও।
বঙ্গাব্দ বা বাংলা সাল অনুযায়ী পৌষ কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশী তিথিটি পড়ে মাঘ মাসে এবং ইংরেজী সাল বা খ্রিস্টাব্দ অনুযায়ী এই তিথিটি পড়ে জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারি মাসে।
🌺🌺🌺🌺🌺🌺🌺
এবার এই তিথিটি অর্থাৎ রটন্তী কালীপূজার তিথি পড়েছে আজ: ৩০শে জানুয়ারি, ২০২২; বাংলা তারিখ :১৬ মাঘ ১৪২৮। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অনুযায়ী চতুর্দশী শুরু হবে আজ সন্ধ্যা ৫.৩০ থেকে, থাকবে ৩১ জানুয়ারি দুপুর ২.১৯পর্যন্ত।
*রটন্তী* শব্দটি এসেছে “রটনা” শব্দ থেকে। রটনা শব্দের অর্থ প্রচার হওয়া। আজকের দিনে দেবী কালিকার মহিমা চতুর্দিকে রটে যায়। অর্থাৎ মায়ের কৃপাশিষ চতুর্দিকে বর্ষিত হয়- তাই এই তিথি রটন্তী তিথি নামে কথিত । মুক্তকেশী মায়ের মহিমা এই তিথিতেই সর্ব স্তরে রটিত হয়ে পড়ে ।
আজ *দেবী ছিন্নমস্তার* ও আবির্ভাব তিথি। ছিন্নমস্তা দেবী দশমহাবিদ্যার একজন। দেবী সতী পূর্বে পিতার গৃহে যেতে গিয়ে ভগবান শিবের কাছে তীব্র বাধা পেয়ে দশমহাবিদ্যা রূপ ধরেছিলেন। ছিন্নমস্তা সেই মহাবিদ্যাদের একজন। এই দেবী নিজ মুণ্ড নিজ হস্তে ছিন্ন করেছেন। বাম হস্তে দেবী নিজেই নিজের মুণ্ড ধারণ করেছেন। ছিন্ন স্কন্ধ দিয়ে তিনটি রক্তধারা দেবীর মুখে ও দেবীর সহচরী ডাকিনী ও বর্ণিনীর মুখে পতিত হচ্ছে। বলা হয় দেবীর দুই সহচরী দেবীর কাছে আহার প্রার্থনা করলে দেবী এই রূপে এসে সহচরীদের ক্ষুধা নিবৃত্তি করেছেন। ভয়ংকরী দেবীর এই রূপ ব্রহ্মচর্যের প্রতীক রূপে পূজিতা হয়।
আবার আজ *মা বগলার* ও আবির্ভাব তিথি । মা বগলামুখী শত্রুনাশিনী দেবী রূপে পূজিতা হন। ভগবান বিষ্ণু প্রলয়ঝড়কে স্তম্ভন করে বিশ্ব রক্ষার নিমিত্ত হরিদ্রা সরোবরে এই দেবীর ধ্যান করেন। এই দেবী দ্বিভুজা আবার চতুর্ভুজা রূপা । ইনি শত্রুর জিহ্বা আকর্ষণ করে গদা বা মুগুর দ্বারা শত্রুকে দমন করেন।
কালী মুক্তকেশী । মায়ের কেশরাশি আলুলায়িত, সেই কেশরাশিতে কোনো বিন্যাস নেই । দেবী নির্বিকারা বিগলিত-চিকুরা । অন্যদিকে এই মুক্তকেশ মায়াপাশের প্রতীক । তিনি নিজে মায়ার অতীতা হয়েও জীবকে মায়াপাশে বদ্ধ করেন । শ্রীশ্রীচণ্ডীর শুরুতে মহর্ষি মেধা এই কথাই বুঝিয়েছেন রাজা সুরথ ও সমাধি বৈশ্যকে। মুক্তকেশী মায়ের এই মায়াপাশে পণ্ডিতদেরও বুদ্ধি ভ্রমিত হয় । আবার তিনি প্রসন্না হলে মুক্তি প্রদান করেন । মুক্তকেশী, এলোকেশী মায়ের কাছে প্রার্থনা জানিয়ে সাধক রামপ্রসাদ সেন তাই গান রচনা করেছেন- “মুক্ত কর মা মুক্তকেশী/ ভবে যন্ত্রনা পাই দিবানিশি।”
মুক্তকেশী মা প্রসন্না হয়ে জীবকে মুক্তি প্রদান করেন। এই প্রসঙ্গে শ্রীরামকৃষ্ণদেব, কেশবচন্দ্রকে বলেছিলেন- “ বন্ধন আর মুক্তি দুয়ের কর্তাই তিনি । তাঁর মায়াতে সংসারী জীব কামিনী কাঞ্চনে বদ্ধ, আবার তাঁর দয়া হলেই মুক্ত, তিনি ‘ভববন্ধনের বন্ধনকারিণী তারিণী’… তিনি লীলাময়ী। এ সংসার তাঁর লীলা, তিনি ইচ্ছাময়ী, আনন্দময়ী।”🌺🙏🏻🌺🙏🏻🌺🙏🏻
সংগৃহীত
[1/30, 8:54 PM] +91 94334 54935: *আজ রটন্তী কালীপুজো!*
দক্ষিণেশ্বরে রটন্তী কালীপুজোর মাহাত্ম্য অনেক, জানুন .অজানা গল্প!**
[ কিছু কিছু পুরনো কাহিনী, পুরনো খবর, পুরনো লেখা—- কখনো পুরনো হয় না। সেরকম একটি অতিপুরনো- চিরনতুন- কাহিনী সম্বলিত পুরনো খবর এখানে পরিবেশিত হল।]
সঞ্চয়ন মিত্র, কলকাতা:
ওয়েব ডেস্ক, এবিপি আনন্দ
Last Updated: 09 Feb 2021 02:24 PM (IST)
*কথিত আছে* , শ্রীরামকৃষ্ণদেব একবার বলেছিলেন, ‘‘রটন্তী কালীপুজোর ভোরে দেখলাম দক্ষিণেশ্বরের গঙ্গায় স্বর্গ দেবতারা নেমে এসেছেন স্নান করতে।
দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে সারাবছরে তিনটে কালীপুজো খুব বড় করে পালন করা হয়। জ্যৈষ্ঠ মাসে ফলহারিণী কালী পুজো। কার্তিক মাসে দীপান্বিতা কালীপুজো। আর তৃতীয়টি মাঘ মাসে রটন্তী কালীপুজো। সারা বছরের প্রতিটি অমাবস্যায় বিভিন্ন কালীপুজো হলেও একমাত্র এই রটন্তী কালী পুজো হয় চতুর্দশী তিথিতে। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরে রটন্তী কালীপুজো খুব ধুমধাম করে পালন করা হয়। মন্দিরে যেমন পুজো হয় তেমনি দক্ষিণেশ্বরের গঙ্গার ঘাটে বহু পুণ্যার্থী এইদিন স্নান করতে আসেন।
কথিত আছে, শ্রীরামকৃষ্ণদেব একবার বলেছিলেন, ‘‘রটন্তী কালীপুজোর ভোরে দেখলাম দক্ষিণেশ্বরের গঙ্গায় স্বর্গ দেবতারা নেমে এসেছেন স্নান করতে।’’ সেই কারণে আজও বহু মানুষ দক্ষিণেশ্বরের গঙ্গার তীরে রটন্তীর ভোরে পুণ্যস্নান করতে আসেন। সমস্ত কালীপুজো অমাবস্যা তিথিতে হলেও রটন্তী কালীপুজো চতুর্দশী তিথিতে হওয়ার পিছনে একটা পৌরাণিক গল্প রয়েছে। ‘রটন্তী’ শব্দের মধ্যে রয়েছে ‘রটে’ যাওয়া কথাটি। রটে যাওয়া অর্থাৎ মুখে মুখে প্রচারিত হওয়া। কিন্তু কি রটেছিল সেটা জানতে আমাদের ফিরে যেতে হবে রাধা কৃষ্ণের প্রেমের কাহিনীতে।
কথিত আছে, শ্রীকৃষ্ণের বাঁশি যখন বেজে ওঠে শ্রীরাধা আর সংসারে মন দিতে পারেন না। সংসার-লোকলাজ সবকিছু ত্যাগ করে তিনি ছুটে যান শ্রীকৃষ্ণের কাছে। শ্রীরাধার শাশুড়ি এবং ননদ জটিলা এবং কুটিলা তাঁরা এই ঘটনার সাক্ষী থেকেছেন বহুবার কিন্তু কখনই শ্রীরাধার স্বামী আয়ান ঘোষ কে তা বিশ্বাস করাতে পারেননি। মাঘ মাসের ঠান্ডা তার ওপর কৃষ্ণাচতুর্দশী হওয়ায় রাতটি ছিল ঘুটঘুটে অন্ধকার। এমন সময়ে কৃষ্ণের বাঁশি বেজে ওঠে আর সেই বাঁশির আওয়াজ শুনে শ্রীরাধিকা বাড়ি ছাড়েন। হাতেনাতে ধরার জন্য তাঁর পিছু নেন জটিলা- কুটিলা। তাঁরা কুঞ্জবনে শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গে শ্রীরাধার মিলিত হওয়ার দৃশ্য চাক্ষুষ করে দ্রুত বাড়ি ফিরে আয়ানঘোষ কে টানতে টানতে নিয়ে যান কুঞ্জবনে। উদ্দেশ্য আয়ানকে বিশ্বাস করাতেই হবে শ্রীরাধিকার এই গোপন প্রেমের কাহিনী। আয়ান ঘোষ ছিলেন শক্তির উপাসক, কালীর পূজারী। এদিকে শ্রীরাধিকা ভয় পেয়েছেন কী করবেন তিনি। এবার শ্রীকৃষ্ণ তাঁকে আশ্বস্ত করলেন। আয়ান ঘোষ কুঞ্জবনে পৌঁছে দেখলেন তাঁর আরাধ্যা মা কালী গাছের তলায় বসে রয়েছেন আর নিজের কোলে তাঁর পা টি রেখে সেবা করছেন শ্রীরাধিকা। দেখে আপ্লুত হলেন আয়ান। তাঁর সাক্ষাৎ কালী দর্শন হল।
তিনি স্বচক্ষে দেখলেন যে কালীর সাধনা তিনি এতদিন ধরে করে এসেছেন, কী অনায়াসে শ্রীরাধিকা তাঁর পদসেবা করছেন। আর এই বার্তা আয়ান ঘোষ এবার ছড়িয়ে দিলেন দিকে দিকে। এই কথাটাই রটে গেল যে তিনি কালীর দর্শন পেয়েছেন। শ্রীকৃষ্ণও এর মাধ্যমে বুঝিয়ে দিলেন কৃষ্ণ এবং কালী অভেদ।
মাঘ মাসের কৃষ্ণ চতুর্দশী তিথিতে কালীর দর্শন পাওয়ায় ওইদিন বিশেষভাবে কালীপুজোর প্রচলন হল। আর তার নাম হল রটন্তী কালীপুজো। শাক্তদের এই বিশেষ দিন শ্রীকৃষ্ণের জীবনের সঙ্গে জুড়ে যাওয়ায় বৈষ্ণবদের কাছেও এটি একটি বিশেষ দিন। আবার এই চতুর্দশী তিথিটি জুড়ে রয়েছে মহাদেবের সঙ্গে। তাই শৈবদের কাছেও এটি একটি বিশেষ দিন। দক্ষিণেশ্বর মন্দিরেও একইসঙ্গে পুজো হবে মা ভবতারিণী, রাধাকৃষ্ণ এবং মহাদেবের।
সংগৃহিত
Published by Shruti Adhya Kundu marketing officer of SYCN.