সবই তো স্মৃতি

*লষ্ট প্যারাডাইস*

 

আমরাই শেষ জেনারেশন যাঁরা স্বর্গ দেখেছি। কোনোও জেনারেশনই আর তা দেখতে পাবে না।

 

আমরাই সেই শেষ জেনারেশন যারা গরুর গাড়ি থেকে সুপার সনিক কনকর্ড জেট দেখেছি। পোস্টকার্ড, খাম, ইনল্যান্ড লেটার থেকে শুরু করে আজকের হোয়াটস্যাপ চ্যাটিং, ই-মেইল পর্যন্তও করছি। অসম্ভব মনে হওয়া অনেক জিনিসই সম্ভব হতে দেখেছি।

 

আমরা সেই জেনারেশন, যারা টেলিগ্রাম এসেছে শুনলেই ঘরগুষ্টির মুখ শুকিয়ে যেতে দেখেছি.. আবার কোম্পানির চাকরি করতে গিয়ে ফি মাসে ম্যানেজারের টেলিগ্রাম পেয়ে ওটাকে বক্সেই নেতিয়ে পড়ে থাকতে দেখেছি।

 

আমরাই সেই শেষ জেনারেশন যারা মাটিতে বসে ভাত খেয়েছি আর প্লেটে ঢেলে চা খেয়েছি সুরুৎ শব্দে, পরে জেনেছি ওটা বদ-অভ্যাস । বিয়ে বা অন্য অনুষ্ঠানে বাড়ির ভিয়েন থেকে বিজলী গ্রিল ক্যাটারিং দেখেছি।

 

আমরাই সেই শেষ জেনারেশন যারা ছোটবেলায় বন্ধুদের সাথে লুকোচুরি, গাছের পাতা হাতে আইস-বাইশ, গাদী, গোল ইঁটের বাট্টুল সাজিয়ে টেনিস বল ছুঁড়ে- পিট্টু, বাঘবন্দি কুমীরডাঙ্গা, ডাঙ্গুলি, কবাড্ডি, মার্বেল খেলেছি, বিশ্বকর্মা-১৫ আগস্টের আগের দিন মাঞ্জা মেরে পরদিন আকাশের দিকে তাকিয়ে ভো-কা-ট্টা..হাত- ফেত্যি এড়িয়ে সুতোকেটে আকাশের বুকে উড়ে যাচ্ছে রং বেরঙের নানান নামের ঘুড়ি….সেলিব্রেশন অন রুফ-টপ।

 

আমরাই সেই শেষ জেনারেশন যারা হ্যারিকেন আর বাল্বের হলুদ আলোতে পড়াশুনা করেছি, বেত থেকে পাখার ডাঁটির চাপকানি খেয়েছি আর চাদরে হাফ বডি ঢুকিয়ে উপুড় হয়ে লুকিয়ে পড়েছি শুকতারার পাণ্ডব-গোয়েন্দা, স্বপন কুমারের ‘কালনাগিনীর ছোবল’ ।

 

আমরাই সেই শেষ জেনারেশন যারা ফ্যান, এসি, হিটার, ফ্রীজ, গ্যাস, মাইক্রোওভেনের অস্থাবর সুখ ছাড়াই কাটিয়েছি ছোটবেলা।

 

আমরাই সেই শেষ জেনারেশন যারা রাইটার্স পেন থেকে বমি করা সুলেখা কালি হাতে মেখে মাথায় মুছে ‘বাবরের যুদ্ধবৃত্তান্ত’ লিখেছি, হিরো পেনে লিখেছি, বড়দের পকেটে বড় নিবের উইংসাঙ দেখেছি আর নতুন বই-খাতার একটা আলাদা গন্ধ আর আনন্দ উপভোগ করেছি।

 

আমরাই সেই শেষ জেনারেশন যারা বিনা টিফিনে স্কুলে গেছি, জিভে ‘কারেন্ট নুন’ ঠেকিয়ে কারেন্ট উপভোগ করেছি। ইস্কুলে টিচারের হাতে মার খেয়ে, বাড়ি এসে নালিশ করাতে সেকেন্ড-রাউন্ড বেদম ফ্রি-ষ্টাইল ওয়ান-ওয়ে ফাইট সহ্য করেছি।

 

আমরাই সেই শেষ জেনারেশন যারা বড়দের সন্মান করেছি এবং করেও যাচ্ছি। আমরাই সেই শেষ জেনারেশন যারা জোৎস্না রাতে ছাদে ট্রানজিস্টরে বিবিসি’র খবর, আমিন সাহানির বিনাকা গীতমালা , শ্রাবন্তীর বোরোলিনের সংসার, শনিবারের বারবেলার শেষ সাক্ষী।

 

আমরাই সেই শেষ জেনারেশন যারা টেলিভিশনে প্রথম সোপ-অপেরা বুনিয়াদ, নুক্কর, প্রিয়া তেন্ডুলকারের ‘রজনী’, শেখর সুমনের প্রথম সিরিয়াল ‘বাহ্ জানাব’, রাতের দিকে ওম পুরীর ভারত ভাগের ‘তমস্’ সঙ্গে চিত্র-হার এরপর রামায়ণ , মহাভারত ঘুরে রাত জেগে খেলা দেখার জন্য ছাদে উঠে এ্যন্টেনা এডজাস্ট করে স্যিগনাল ধরার চেষ্টা করেছি । বড়লোকদের ছিল মই মার্কা পাঁচলাঠির এন্টেনা, ডান্ডায় বাঁধা বুষ্টার। আমাদের ছিল তিন লাঠির, আর ছিল টিভি স্ক্রিনে পার্মানেন্ট ঝিলমিলানি, তাতে কোনও প্রব্লেমই হোত না, ওটা জীবনের অঙ্গ ধরাই ছিল। গন্ডগোল পাকাতো ঐ লোডশেডিং। পয়েন্ট ধরে ধরে ভাড়ার জেনারেটর তখনও পাড়ায় আসেনি।

 

আমরাই সেই শেষ জেনারেশন যারা আত্মীয় স্বজন বাড়িতে আসার জন্য অপেক্ষা করতাম। ইচ্ছে করে বৃষ্টি ভিজে ইস্কুল থেকে বাড়ি ঢুকেছি। আমরা সেই শেষ জেনারেশন যাঁরা রাস্তার হলুদ বাল্ব জ্বলার আগেই বাড়ি ঢুকেছি।

 

আমরা সেই শেষ জেনারেশন যারা পূজোর সময় শুধু একটা নুতন জামার জন্য অপারগ বাবার দিকে চেয়ে থেকেছি।

 

আমরা সেই শেষ প্রজন্ম যারা রাস্তাঘাটে স্কুলের স্যারকে দেখামাত্র রাস্তাতেই নির্দ্বিধায় প্রনাম করেছি।

আমরাই লাষ্ট জেনারেশন এখনও বন্ধু খুঁজি। জীবনের চলার স্রোতে হারিয়েছি জীবনের স্বর্গ, লষ্ট প্যারাডাইস।😊

 

Post টি আমি হোয়াটস্যাপ এ পেয়েছি..

আমি শুধু আপনাদের কাছে পৌঁছে দিলাম..

এই post টি আমার কাছে আসার পর আমি খুব নস্টালজিক হয়ে পড়েছিলাম..

তাই তার সংক্রমন ঘটাতে মন চাইলো..

TAKEN FROM WHAT’SAPP

PUBLISHED BY SHRUTI ADHYA KUNDU MARKETING OFFICER OF SYCN