মহাশক্তির জাগরণ।
তিনশো চুয়াত্তরতম পর্ব।
আজকের নিবেদন–ঠাকুর ও স্বামীজী।
আজ দ্বিতীয় ও শেষ পর্ব।
ওগো ঠাকুর,
তোমার চোখে জল দেখে স্বামীজী তখন ভাষাহীন
হ’য়ে গিয়েছেন। তাঁর সারা শরীর ঘামে ভিজে
গিয়েছে। এবার শুরু হোলো কাঁপুনি–!
স্বামীজী কাঁপছেন। ভয়ে নয়, আত্মগ্লানিতে!
স্বামীজী সেদিন শুধু কাঁদেন নি। তাঁর মনে
আত্মগ্লানি জেগেছিল।
তিনি ওখানে দীক্ষা নেবেন না ব’লে ঠিক করলেন।
দীক্ষার দিন স্হগিত থাকলো। তবু তাঁর মনের
দ্বন্দ্ব দূর হোলো না।
ঐ ঘটনার দুদিন পরে পওহারী বাবার কাছে
দীক্ষা নেবার জন্য স্বামীজীর মন আবার ব্যাকুল
হ’য়ে উঠলো!
এবারও স্বামীজীকে তুমি দর্শন দিলে ঠাকুর!
তবে সেইরাতে এমন কিছু ঘটেছিল যা স্বামীজী
কখনো কারো কাছে প্রকাশ করেন নি।
এভাবে পাঁচ-ছয়বার ঠাকুরের দর্শন পাবার পর
সেখানে দীক্ষা নেবার ইচ্ছা চিরতরে হারিয়ে
গেল স্বামীজীর মন থেকে।
তাঁর মনে ঠাকুর ছাড়া আর কারও প্রবেশের
অবকাশ রইলো না।
স্বামীজী আবার ঠাকুরকে দেখেছিলেন। অদ্ভুত,
অলৌকিক সে ঘটনা। বিশ্ব ধর্ম সম্মেলনে যোগ
দিতে যাবার আগে একদিন তিনি অর্ধনিদ্রিত
অবস্হায় শুয়ে আছেন; তখন দেখলেন তাঁর
সামনে দিগন্তবিস্তৃত সমুদ্র–; ঠাকুর সমুদ্রে
নাবলেন! তারপর জলের ওপর দিয়ে হাঁটতে
হাঁটতে ওপারে পৌঁছে গেলেন। ইশারায়
তাঁকে অনুসরণ করবার নির্দেশ দিলেন ঠাকুর।
এক অনাবিল শান্তিতে ভ’রে উঠলো স্বামীজীর
মন। কানে বেজে উঠলো ঠাকুরের বাণী–“যাও–!”
আর তারপরের ঘটনা আমাদের সকলেরই জানা, এবং তা চিরতরে এক পরম গৌরবের ইতিহাস রচনা করেছে।