🌺🌺শ্রীমার স্নেহ🌺🌺

#লোকজননী

 

সমাজে যারা অবহেলিত কিংবা নিজকৃত অপরাধের জন্যই লোকের চোখে হেয়, মায়ের স্নেহ থেকে তারাও বঞ্চিত হত না। কারণ, মায়ের ভালবাসায় ভালবাসার পাত্রের দোষ-গুণের হিসাব কখনও স্থান পেত না ।তাই মাতাল পদ্মবিনোদ যখন প্রতি রাতে এসে মায়ের জানালার নীচে দাঁড়িয়ে গান ধরেন ওঠ গো করুণাময়ি, খোল গো কুটির দ্বার’—মা তাঁকে দর্শন না দিয়ে পারেন না।” কিংবা গ্রামের এক বালবিধবা যখন ক্ষণিকের ভুলে গায়ে কলঙ্ক মেখে বসে, তখন সারা গ্রাম নিন্দায় মুখর হয়ে উঠলেও মা নীরবে প্রার্থনা জানিয়ে যান যাতে ভগবান ‘দুঃখিনী’র দিকে মুখ তুলে চান। দৈবক্রমে মায়ের কৃপাপ্রাপ্ত এক জমিদার-সন্তান ঘটনাটির মিটমাট করে দিলে মা তাঁকে আশীর্বাদ করে বলেছিলেন: ‘বাবা! দুঃখিনীকে বাঁচিয়ে দিয়েছ, রক্ষা করেছ, শুনে আমার প্রাণ ঠাণ্ডা হয়েছে। ভগবান তোমার মঙ্গল করবেন।’ স্বামী সারদেশানন্দ এই প্রসঙ্গে মন্তব্য করেছেন : ‘যাহাদের আমরা অতি অধম বলিয়া ঘৃণা করি, তাহাদেরও ভালবাসিয়া তাহাদের বিপদের সময় এই সমবেদনা, এই অপার স্নেহ জগজ্জননী ছাড়া, “জন্ম-জন্মান্তরের মা”, “সতেরও মা, অসতেরও মা” ছাড়া আর কে দেখাইতে পারে ! শ্রীমা সত্যিই পারতেন, পাপকে ঘৃণা করেও ‘পাপী’কে কোলে টেনে নিতে।

 

❣️❣️❣️❣️❣️❣️❣️❣️

 

শ্রীমার স্নেহ-ভালবাসা যেমন পাত্র-অপাত্র নির্বিশেষে সমানভাবে প্রবাহিত হত, অপরদিকে মায়ের প্রতিটি সন্তানও অনুভব করতেন, মা যেন তাঁকেই সবচেয়ে বেশী ভালবাসেন। জনৈক ভক্ত মায়ের বাড়িতে এসে প্রসাদ পাচ্ছেন। একই সঙ্গে খেতে বসেছেন আরও জনা পনেরো ভক্ত। মা নিজে পরিবেশন করছেন সবাইকে। ভক্তটির মনে হয় : এত জন ভক্তের মধ্যে মা যেন তাঁকেই সবচেয়ে বেশী যত্ন করে খাওয়াচ্ছেন। কিন্তু খাওয়া হয়ে গেলে অন্য ভক্তদের সঙ্গে কথা বলে জানলেন যে, প্রত্যেকেরই মনে হয়েছে যে মা তাঁকেই বেশী যত্ন করেছেন।

 

🌼🌼🌼🙏🙏🙏🌼🌼🌼

 

করুণাময়ী জননী আমার প্রণাম তোমার শ্রীচরণে

# TAKEN FROM FACEBOOK

#published by Shruti Adhya Kundu marketing officer of SYCN.

🌺🌺শ্রীমার জীবনযাত্রা🌺🌺

দক্ষিনেশ্বরে মায়ের রোজনামচা
————————————————
মা ভোর চারটের আগে বাসি কাজকর্ম সেরে, শৌচ ও স্নানাদি সম্পন্ন করে পূজায় ও ধ্যানে বসতেন।পূজা,জপ,ধ্যান এতে প্রায় দেড় ঘন্টা কেটে যেত। তারপর রান্না করতে বসতেন, রান্না হলে,যে দিন সুযোগ ঘটতো, সেদিন মা নিজহাতে ঠাকুরকে স্নানের জন্য তেল মাখিয়ে দিতেন। ঠাকুর স্নানে গেলে মা ঠাকুরের জন্য পান সেজে রাখতেন, ঠাকুর স্নান সেরে ঘরে এলেই মা জল,আসন‌ ও খাবারের থালা নিয়ে এসে ঠাকুরকে আহারে বসিয়ে নানা কথার মধ্য দিয়ে চেষ্টা করতেন,যাতে খাবার সময় ভাব-সমাধি উপস্থিত হয়ে আহারে বিঘ্ন না ঘটায়।

একমাত্র মা খাবার সময় ঠাকুরের ভাব-সমাধি আসা অনেকটা ঠেকিয়ে রাখতে পারতেন, আর কারো সাধ্য ছিল না। ঠাকুরের খাওয়া হলে, মা একটু কিছু মুখে দিয়ে জল খেয়ে নিতেন, তারপর পান সাজতে বসতেন ও গুন গুন করে গান গাইতেন,তা খুব সাবধানে যেন কেউ শুনতে না পায়।

এরপর যখন কলের বাঁশী বেজে উঠতো, তাই শুনে তিনি খেতে বসতেন,দেড়টা দুটোর আগে কোনদিন‌ই মায়ের খাওয়া হোত না। খাবার পর নামমাত্র বিশ্রাম করে চুল শুকোতে বসতেন তিনটে নাগাদ সিঁড়িতে। তারপর আলো ঠিকঠাক করে, তোলা জলে হাত, মুখ ধুয়ে কাপড় কেচে সন্ধ্যার জন্য প্রস্তুত হতেন। সন্ধ্যায় আলো দিয়ে, ঠাকুর দেবতার সামনে ধূনো দেখিয়ে মা ধ্যানে বসতেন। এরপর রাতের রান্না, ঠাকুরকে খাওয়ানো, শাশুড়িকে খাওয়ানো সেরে মা আহার করতেন। এরপর একটু বিশ্রাম করে শুয়ে পড়তেন।
এই সব কাজের মধ্যেও শাশুড়ির সমস্ত রকম সেবা যত্নের কোন ত্রুটি রাখতেন না।

  1. সংগৃহীতTAKEN FROM FACEBOOK
  2. PUBLISHED BY SHRUTI ADHYA KUNDU MARKETING OFFICER OF SYCN.

শ্রীমার পূজার বিশেষত্ব

মাতৃ অনুধ্যান :

**************

 

শ্রীশ্রীমায়ের পূজার বৈশিষ্ট্য :

**************************

 

শ্রীশ্রীমায়ের পূজার একটি উজ্জ্বল বৈশিষ্ট্য ছিল আড়ম্বরহীনতা। পূজা সাত্ত্বিক, রাজসিক ও তামসিক ভেদে তিন প্রকার। সাত্ত্বিক পূজায় কোন আড়ম্বরের প্রয়োজন হয় না। এই পূজায় কোন কামনা নেই, প্রেম-ভক্তিই হলো এই পূজার আসল উপকরণ। শ্রীমদ্ভগদ্ গীতায় বলা হয়েছে :

 

অফলাকাঙ্ক্ষিভির্যজ্ঞো বিধিদৃষ্টো য ইজ্যতে।

যষ্টব্যমেবেতি মনঃ সমাধায় স সাত্ত্বিকঃ।।

 

কোনরূপ ফলের আকাঙ্খা না করে শাস্ত্রবিধি অবলম্বনে শুধু পূজার জন্য যে পূজা তাই-ই সাত্ত্বিক পূজা। ভগবান আরও বলেছেন :

 

পত্রং পুষ্পং ফলং তোয়ং যো মে ভক্ত্যা প্রযচ্ছতি।

তদহং ভক্ত্যপহৃতমশ্নামি প্রযতাত্মনঃ।।

 

ফল, ফুল, জল, পাতা ইত্যাদি যে আমাকে ভক্তির সঙ্গে অর্পণ করে শুদ্ধচিত্ত সেই ভক্তের উপহৃত বস্তু আমি গ্রহন করি।

 

শ্রীশ্রীমায়ের পূজাও ঐরূপ ছিল। তিনি পরম ভক্তি ও নিষ্ঠার সঙ্গে ঠাকুরের পূজা করতেন। বেশী সময় নিয়ে জাঁকজমক করে পূজা করতেন না। ঠাকুরের আসনের নীচে কমণ্ডলুতে গঙ্গাজল থাকত। তার আশেপাশে চন্দনকাঠ, চন্দনপিঁড়ি, পঞ্চপাত্রও দু-একটি পূজার উপকরণ থাকত। শ্রীশ্রীমা সকাল প্রায় নয়টা নাগাদ সব কাজ সেরে পূজায় বসতেন। জয়রামবাটীতে ফুলের অভাবে তিনি তুলসী পাতা ও জল দিয়েই নির্দ্বিধায় পূজা করতেন। শ্রীশ্রীমা তুলসীকে অতি পবিত্র মনে করতেন। বলতেন, ” তুলসী-স্পর্শে সব শুদ্ধ হয়।”

 

তুলসী মাহাত্ম্য স্মরণ করেই হয়তো শ্রীশ্রীমা প্রতিদিন পূজার পর ঠাকুরকে নিবেদিত তুলসী প্রসাদ-স্বরূপ গ্রহন করতেন।

 

     ————স্বামী প্রমেয়ানন্দ।

TAKEN FROM FACEBOOK

PUBLISHED BY SHRUTI ADHYA KUNDU MARKETING OFFICER OF SYCN