ভারতীয় শিল্প ও তার প্রাণবন্ত ইতিহাস || পর্ব – ২ ||

 

ভারতীয় শিল্পের প্রকারভেদ : চিত্রকলা -১

 

 ভারতের প্রতিটি অঞ্চল তার নিজস্ব স্বতন্ত্র শিল্প শৈলী প্রদান করে।  ধর্মীয় মোটিফগুলি হল কিছু সাধারণ বিষয়বস্তু, যা প্রায়ই পৌরাণিক মানব ও প্রাণীর রূপের পাশাপাশি বিস্তৃত অলঙ্করণের বৈশিষ্ট্যযুক্ত।  ভারতের ইতিহাসকে বিস্তৃত করার জন্য তিনটি সর্বাধিক প্রচলিত শিল্প ফর্ম হল চিত্রকলা, স্থাপত্য এবং ভাস্কর্য।

 

 চিত্রকলা

 

 ভারতে আবির্ভূত চিত্রকলার প্রতিটি শৈলী পূর্ববর্তী প্রজন্মের ঐতিহ্য, রীতিনীতি এবং মতাদর্শের প্রতিনিধিত্ব করে।  যদিও প্রারম্ভিক চিত্রগুলি দেয়ালে বা ম্যুরাল হিসাবে বিদ্যমান ছিল, তবে শিল্প ফর্মটি শেষ পর্যন্ত আরও আধুনিক উপকরণ যেমন কাগজ, ক্যানভাস, কাপড় এবং অন্যান্য মাধ্যমে স্থানান্তরিত হয়েছিল।  নীচে কিছু জনপ্রিয় ভারতীয় লোকশিল্প চিত্রকলার শৈলী সম্বন্ধে আলোচনা করা হল।

 

 মধুবনী চিত্র

 

 ভারতের কিছু জনপ্রিয় চিত্র শৈলীর মধ্যে মধুবনী চিত্র অন্যতম।  এই শৈলীটি বিহারের মিথিলা অঞ্চলে প্রাচীর শিল্পের (Wall Art) একটি রূপ হিসাবে উদ্ভূত হয়েছিল, কিন্তু পাশ্চাত্য শিল্প বিশ্বের কাছে এটি ব্যাপকভাবে পরিচিত ছিল না যতক্ষণ না ব্রিটিশ সরকারী কর্মচারী এবং শিল্প ইতিহাসবিদ ডব্লিউ.জি আর্চার 1934 সালে ভারত ও নেপালের সীমান্তের কাছে একটি ভূমিকম্পে ক্ষয়ক্ষতি পরিদর্শন করার সময় তাদের প্রতিভায় হোঁচট খেয়েছিলেন।

 

 মধুবনী শৈলীটি সংস্কৃতি এবং ঐতিহ্যের একটি সরল এবং উদ্দীপক চিত্রায়ন দ্বারা উপস্থাপিত হয়, সাধারণত পৌরাণিক দৃশ্যগুলিকে চিত্রিত করে।  শিল্পীরা স্পন্দনশীল চিত্রগুলিকে প্যারড-ডাউন (Pared-down) প্যাটার্নের সাথে সংযুক্ত করে, প্রায়শই ফুল, পশু বা পাখির মোটিফ বহন করে।  ভার্নি, কাচনি, গেরু, গোডনা এবং তান্ত্রিক সহ বিভিন্ন শৈলীতে এই শিল্পের চর্চা করা হয়।

আমাদের এই ব্লগটিকে নিয়মিত Follow করুন। এখানে আপনি ভারতীয় শিল্পের ইতিহাস সমন্ধে পর্যায়ক্রমে জানতে পারবেন।

ধন্যবাদ।।

Sri Yoga Center Blog

 

|| অঙ্কন কথা || পর্ব – ৬

|| মাধ্যম জলরঙ ||

জলরঙ (Water colour) এমন একটি মাধ্যম যার দ্বারা খুব শীঘ্রই কোনো চিত্র ফুটিয়ে তোলা সম্ভব। এই মাধ্যমের দ্বারা কোনো বিষয়কে পরিপূর্ণ খুঁটিনাটি না ধরেই খুব সহজেই সুন্দর রূপে ফুটিয়ে তোলা যায়। তারজন্য চাই অভ্যাস ও ধৈর্য। যেকোনো বিষয়কে নিজের আয়ত্তে নিয়ে আসতে গেলে অভ্যাস ও ধৈর্যের প্রয়োজন হয়।এই জলরঙের পেপার নির্বাচন একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। বাজারে যে সমস্ত ড্রয়িং খাতা পাওয়া যায় সেগুলি শুরুতে জলরঙ প্র্যাকটিসের জন্য ঠিক আছে কিন্তু তাতে উপযুক্ত জলরঙের ছবি ঠিক ভাবে আঁকা যায় না। এই ধরনের পেপারের জল ধারণ ক্ষমতা খুবই কম থাকে আর তাছাড়া এই পেপার আমরা যতই রং দিই সেই তুলনায় তার উজ্জ্বলতা আসেই না। যার ফলে ছবির সৌন্দর্য্য কমে যায়। তাই জলরঙ করার জন্য আমদের উপযুক্ত কাগজ কেনা জরুরি। কিন্তু উপযুক্ত কাগজ পাবো কোথায়? এটা একটা প্রশ্ন। যাদের বাড়ি কলকাতার আশেপাশে তারা কোনো প্রসিদ্ধ আর্ট এর দোকান থেকে তা সংগ্রহ করতে পারে। এই জলরঙের কাগজের গুণমান অনুযায়ী মূল্য কম বেশি হয়। তবে এই ধরণের পেপার গুলিতে কমবেশি ভালোই কাজ করা যায়। যাদের বাড়ির আশেপাশে এই ধরনের পেপার সংগ্রহ করার উপযুক্ত কোন দোকান নেই, তারা অনলাইনে এই পেপার অর্ডার করতে পারেন। সেখানে আপনি সাইজ A4 থেকে ফুল সিটের কাগজ পেয়ে যাবেন। এরপর বিষয় হল রঙ। মার্কেটে জলরঙের দুটি বিকল্প পাওয়া যায় একটা স্টুডেন্ট ওয়াটার কালার অপরটি হল আর্টিস্ট ওয়াটার কালার। আর্টিস্ট ওয়াটার কালারের দাম একটু বেশি হলেও জলরঙের আসল মজা ও তার বিশেষ ধর্ম স্বচ্ছতাকে ঠিকভাবে বুঝতে গেলে আমাদের ওটাই সংগ্রহ করতে হবে। আর ব্রাশের (তুলি) ক্ষেত্রেও তাও আমরা অফলাইনে অথবা অনলাইন থেকে তা সংগ্রহ করতে পারি। প্রয়োজন অনুযায়ী কয়েকটা রাউন্ড ব্রাশ আর একটা বা দুটি ফ্ল্যাট ব্রাশ (১ ইঞ্চি, ১/২ ইঞ্চি)।

 

(Content subject to copyright)

|| অঙ্কন কথা || পর্ব – ২

এই পর্ব আমাদের Intermediate চিত্রশিল্পী বা শিক্ষার্থীদের জন্য যারা প্যাস্টেল, ওয়াটার কালারের সাথে পরিচিত। আমরা যখন আঁকা শিখি, তখন আমাদের বাড়ির কাছাকাছি যে সব শিক্ষকরা আছেন তারা বিভিন্ন ড্রয়িং বই থেকে বিভিন্ন সিনারী আঁকতে দেন। আমরা সেটা থেকেই কপি করে থাকি। এটা শুরুতে ড্রয়িং শেখার জন্য ঠিক আছে। কিন্তু পরবর্তীতে প্রতিনিয়ত কপি করা একটা ভুল পদ্ধতি। প্রত্যেক শিক্ষার্থীর দেখার দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন হয়। যে শিল্পীর বইটা থেকে আমরা কপি করছি তার সিনারী বা কম্পোজিশন, দেখার দৃষ্টিভঙ্গি, কালার, কন্সেপ্ট আলাদা। সেই শিল্পীও একটা প্রকৃতির কোন দৃশ্যকে সেখানে বসে বা তার ফটোগ্রাফী করে কাজ করছেন। সেক্ষেত্রে তিনি ওই প্রকৃতি কে তার চোখে তিনি যেভাবে দেখছেন সেভাবেই একেছেন। তাই আপনি দেখবেন বিভিন্ন বই এ বিভিন্ন শিল্পীর কাজ ও ড্রয়িং ভিন্ন, অতএব ওটা ওনাদের একজনের নিজস্ব শৈলী। সেটা দেখে কপি করলে আমরা নিজে কিছু শিখতে পারব না। কারণ তিনি সেখানে তার ড্রয়িং তার কালার তিনি করে সবকিছু করে দিয়েছেন। সেটা দেখে আঁকলে আমরা তাকে কপি করছি, তার কাজের স্টাইল আমারা অভ্যাস করে ফেলেছি। ফলে আমরা আমাদের নিজস্বতা হারিয়ে ফেলব এবং আমারা নতুন কিছু ভাবতে বা দেখতে পারবো না। ছবি আঁকা শেখার জন্য আমরা বিভিন্ন বড় বড় শিল্পীর কাজ গাইড হিসাবে দেখতে পারি। কিন্ত সেটা থেকে সবসময় হুবুহ কপি করার চেষ্টা করতে পারি না। হ্যা হয়ত কোন সময় একটু তার কাজ দেখে করতে ইচ্ছে করছে সেক্ষত্রে আপনি করতেই পারেন, তবে প্রতিনিয়ত না। সে ক্ষেত্রে আমরা যেটা করতে পারি সেটা হল আমরা কোন বাইরের দৃশ্য দেখে সেখানে বসে বা ফটোগ্রাফি করে সেটা দেখে ড্রয়িং ও কালার করতে পারি। এরফলে যে কাজটা তৈরি হবে সেটা হবে সম্পূর্ণ আমার নিজস্ব শৈলী। ফলে ধীরে ধীরে আমরা নিজেই প্রকৃতির রঙ, তার ড্রইয়িং এর সাথে পরিচিত হব। তার ফলে যেটা সৃষ্টি হবে সেটা সম্পূর্ন আপনার নিজস্ব একটা কাজ। একটা ছবি। এবং সেটা হবে অদ্বিতীয়।

Writing by Bachchu Chanda (Masters of Fine Art, kolkata)n

[Content subject to copyright.]

 

**প্রকৃতির কি কি জিনিস আমরা কিভাবে আঁকব সেটা পরবর্তী পর্বে আলোচনা করবো।