লক্ষ্মীপুজোর সঙ্গে আলপনা জড়িয়ে গেছে প্রবলভাবে। সেই কোন আদ্যিকাল থেকে গ্রামবাংলার ঘর, দাওয়া সেজে উঠত নানা অলংকরণে। যুগ বদলেছে; কিন্তু সেই রীতি বদলায়নি আজও। অবশ্য লক্ষ্মী তো কেবল একটি দিনের অতিথি নন। প্রতি বৃহস্পতিবার তাঁর আরাধনা চলে বাংলার ঘরে। সবার কাছে এটা একটা ব্রত। আর কিছু থাকুক আর না থাকুক, একটা লক্ষ্মীর পাঁচালি আর ঘট না থাকলে ঠাকুরের আসনটা কেমন খালি খালি লাগে। আমাদের সংস্কৃতির মধ্যেই ঢুকে গেছে এমন পরম্পরা…..
লক্ষ্মীপুজোর আলপনার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হল লক্ষ্মীর পা। এই পা কিন্তু একদিনে আসেনি। আলপনার সঙ্গেই বিবর্তিত হতে হতে আজ তার এই অবস্থান। প্রাগৈতিহাসিক সময়ের দিকে যদি তাকানো যায়, তাহলে দেখা যাবে শিকার করতে যাওয়ার সময় পায়ের ছাপ দেখেই মানুষ বুঝে যেত কোন জন্তু এসেছিল। ফলে তাদের চিহ্নিতও করা যেত সহজে। এইভাবেই চিহ্নের মাধ্যমে মানুষ বুঝতে শিখেছিল সেই সময়কে। গুহাচিত্রের নমুনাও আমাদের সামনেই আছে। যত সময় এগোতে লাগল, তত এই চিহ্নের বিবর্তন হতে লাগল। এবং সেই পথ ধরেই লক্ষ্মীর প্রতীক হিসেবেই তাঁর পায়ের ছাপের আগমন। কারণ আগেকার দিনে লক্ষ্মীর মূর্তি হত না। আলপনা দিয়ে নানা অনুসঙ্গ এঁকেই পুরোটা করা হত। সেক্ষেত্রে লক্ষ্মীর পায়ের ছাপ সেই দেবীত্বের আগমনকেই বলে দেয়। আর চাষের ফসল, শিকার করে নিয়ে আসা খাবার ইত্যাদি সমস্তই তো সম্পদ। আর লক্ষ্মী তো সেই সম্পদেরই দেবী। এইভাবেই লক্ষ্মীর পায়ের প্রচলন আলপনায় চলে আসে।।
(সংগৃহিত)