উদ্ধব গীতা

উদ্ধব গীতা –ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জীবনের অন্তিম মহা উপদেশ ভাগবতের একাদশ স্কন্দ্বের সপ্তম অধ্যায় থেকে উনত্রিশ অধ্যায় পর্যন্ত বর্ণিত হয়েছে। এই ২৩টি অধ্যায়কে “উদ্ধব গীতা” বলা হয়।ভগবান শ্রী কৃষ্ণের সারথি ছিলেন উদ্ভব। শ্রী কৃষ্ণ যখন গোলক ধামে ফিরে যেতে মনস্থ করলেন তখন তিনি তাঁর সমস্ত ভক্তের মনোকামনা পূর্ণ করছেন। কিন্তু শুধু উদ্ভব ছিলেন নীরব আসক্তিহীন। উদ্ভব কিছু চাইছে না দেখে ভগবান তাকে কিছু চাইতে বললেন। উদ্ভব বলল প্রভু আমি তো আপনার কাছ থেকে কোনদিন কিছু চাইনি তবে আজ কেন চাইব ? ভগবান বললেন উদ্ভব আজ তুমি না চাইলেও আমি তোমাকে কিছু দেব। না দিলে অবিচার হবে। উদ্ভব বলল, “বেশ তো যদি কিছু দিতেই চান তবে আমার কিছু প্রশ্নের উত্তর দিন।” “কি প্রশ্ন বলো উদ্ভব ? আমি তোমার প্রশ্নের উত্তর অবশ্য দেব”। উদ্ভব বলল “প্রভু আপনি তো পাণ্ডব দের পরম মিত্র ছিলেন তবুও তাদের সবথেকে বড় বিপদে আপনি তাদের পাশে কেন থাকেন নি ? আপনি তো দীনবন্ধু। আপনার পরম মিত্রদের পাশে দাঁড়ালে হয়তো কুরুক্ষেত্রের মহাযুদ্ধ আপনি আটকে দিতে পারতেন। মহারাজ যুধিষ্ঠির যখন পাশা খেলায় হেরে যাচ্ছিলেন তখন আপনি কেন যাননি তাঁকে সাহায্য করতে ? আপনি কেন দ্রৌপদীর বস্ত্র হরণে বাধা দিলেন না ?” এই প্রশ্ন শুনে ভগবান বললেন “উদ্ভব আমি তোমার প্রশ্নের উত্তর দেব তবে তার আগে তোমাকে জানতে হবে ভক্ত, ভগবান ও বন্ধুত্ব পালনের কিছু নিয়ম। যখন কোন ভক্ত আমাকে বন্ধু বলে ভাবে তখন সে মনে করে আমি তার সাথে সর্বদা থাকি। তখন সেই ভক্ত তার সব কাজের সাক্ষী মানে আমাকে। আমাকে সাক্ষী করলে কখনও কোন ভক্ত কোন খারাপ কর্ম করতেই পারে না। কারণ আমি তার সাথে সর্বদা থেকে তাকে কুকর্ম থেকে বিরত রাখি। কিন্তু যখন সেই ভক্ত আমার ওপর থেকে বিশ্বাস হারিয়ে ফেলে অহংকারের ফলে আমার সঙ্গ ত্যাগ করে তখন আমি নিরুপায় হয়ে যাই। আমার থেকে দুরত্ব বাড়লেই তখন সে পাপ করতে শুরু করে। অহংকারের প্রাচীর তুলে সে তখন আমাকে আড়াল করে রাখে। অসহায়ের মত দেখা ছাড়া আমার কিছুই করার থাকে না। কারণ মানুষের কর্মের ওপর ভগবানের কোন অধিকার নেই। এটাই জগতের নিয়ম। মানুষ স্বাধীন জীব। শুধু মানুষ কেন জগতের সমস্ত জীবই স্বাধীন। মানুষ তো আরও স্বতন্ত্র। তার বিবেক, বুদ্ধি, মনুষ্যত্ব আছে। তাই তার স্বাধিকারের ওপর হস্তক্ষেপ ভগবান ও করতে পারেন না। মোহ, মায়া ও অহংকারের বশীভূত হয়ে বাসনাসক্ত মানুষ পাপের বোঝা বাড়িয়ে চলে। এবার তোমার প্রশ্নের উত্তর দেব উদ্ভব। যুধিষ্ঠির যখন পাশা খেলার জন্য শকুনির আমণ্ত্রণ গ্রহণ করল তখন সে আমাকে জানায় নি। কারণ সে জানত পাশা খেলায় আমি বাধা দেব। যখন আমি জানতে পারলাম সেই কথা তখন সে আমাকে দিব্যি দিয়ে আমাকে অসহায় করে দিল। যুধিষ্ঠির অহংকার ও অতি আত্মবিশ্বাসের দ্বারা চালিত হয়ে পাশা খেলতে গেল। যুধিষ্ঠির আমাকে দ্যূত ক্রীড়াস্থলে প্রবেশ করতে নিষেধ করেছিল। ভাবো তো উদ্ভব যদি শকূনির সাথে আমি পাশা খেলতাম তাহলে খেলার পরিণাম কি হতো ? পঞ্চ পাণ্ডব কি সব কিছু হারিয়ে নিলামে উঠত ? দ্রৌপদীর বস্ত্র হরণ কি হতো ? দুঃশাসন যখন দ্রৌপদীর কক্ষে গিয়ে তাকে অপমান করতে লাগল, তার কেশ আকর্ষণ করে তাকে সভাকক্ষে টেনে নিয়ে এল তখনও দ্রৌপদী আমাকে ডাকেনি। আমার কথা তখন তার মনেই ছিল না। যখন শেষ মুহূর্তে সম্মান রক্ষার জন্য এক ফালি বস্ত্র অঙ্গে ছিল না তখন সে আমাকে স্মরণ করল। আমার প্রিয় সখী আমাকে স্মরণ করছে এক্কেবারে শেষ মুহূর্তে। ডাকা মাত্রই আমি দ্রৌপদীর কাছে গিয়ে তার সম্মান রক্ষা করেছি। অর্জুন, ভীম, নকুল, সহদেব যখন তারা সবাই দুর্যোধনের কাছে নিলাম হয়ে যাচ্ছিল তখন তারা কেউ আমাকে সাহায্যের জন্য ডাকেনি। দ্রৌপদীর স্মরণ মাত্রই আমি দীনবন্ধুর মত সূক্ষ্ম শরীরে হাজির হয়ে তাকে সাহায্য করেছিলাম উদ্ভব। তাহলে এবার বল আমার দোষ কোথায় ?”উদ্ভব বলল “আমি বুঝেছি প্রভু। আপনাকে বিস্মরণ করা মানে হল আমার মরণ। তাই প্রভু আপনি আমাকে আশীর্বাদ করুন আমি যেন এক মুহূর্ত আপনাকে না ভুলে যাই।” ভগবান আশীর্বাদ করে বললেন “তথাস্তু”।শ্রী কৃষ্ণ আরও বললেন “উদ্ভব তোমার আর আমার এই কথোপকথন পৃথিবীতে উদ্ভব গীতা নামে অমর হয়ে থাকবে। অমর হয়ে থাকবে তোমার নাম ও”।প্রিয় সখা উদ্ধবকে দেওয়া উপদেশের প্রারম্ভে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলছেন — হে উদ্ধব, তুমি স্বজন বন্ধুদের প্রতি সম্পূর্ন স্নেহ পরিত্যাগ পূর্বক আমাতে সম্যক্ভাবে মনকে আবিষ্ট করে সমদৃষ্টি হয়ে পৃথিবীতে বিচরণ কর।ইন্দ্রিয় সমুদায়কে সংযত করে যোগযুক্তচিত্ত হয়ে এই জগৎকে আত্মাতে (অবিদ্যার দ্বারা) প্রসারিত দেখ। জগদধিষ্ঠান আত্মাকে জগদীশ্বর আমাকে দর্শন কর। অর্থাৎ আত্মাকে ব্রহ্মরুপে অনুভব কর।তত্ত্ববিচারের দ্বারা নিজেকে উদ্ধার করা যায় – এ বিষয়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ উদ্ধবকে বলছেন – “হে উদ্ধব, এই সংসারে যে মনুষ্য এই জগৎটা কি, এতে কি কি ব্যাপার ঘটছে, কেন ঘটছে, কে ঘটাচ্ছে ইত্যাদি তত্ত্বের বিচার করতে নিপুন, তিনি চিত্তে বাসা বেঁধে থাকা অশুভ বাসনা থেকে নিজেই নিজেকে রক্ষা করতে পারেন।সমস্ত প্রানিগনের মধ্যে বিশেষ করে মানুষের অন্তরাত্মাই জীবের হিত এবং অহিতের উপদেশক গুরু। কেননা, মানুষ প্রত্যক্ষ এবং অনুমানের দ্বারা নিজের হিত-অহিতের নির্নয় করতে সর্বতোভাবে সমর্থ। হে উদ্ধব, শরীরধারিগনের মুক্তিকারিনী আত্মবিদ্যা এবং বন্ধনকারিনী অবিদ্যা, এই উভয়ই আমার মায়ার দ্বারা রচিত অনাদিসিদ্ব আমার দুইরুপ।হে মহামতি উদ্ধব, আমার অংশরুপ জীব অনেক নয়, একই। এর অনাদি অবিদ্যার দ্বারা বন্ধন এবং তেমনি বিদ্যার দ্বারা মুক্তি ব্যবহারদৃষ্টিতে স্বীকার করা হয়।অন্ধ বুদ্ধি মনুষ্যেরা এই মনোকল্পিত শরীরকে ‘আমি’ এবং ‘আমার’ মনে করে এই আমি আর এটা অন্য – এইরুপ ভ্রমবশতঃ অনন্ত অজ্ঞান অন্ধকারে ইতস্ততঃ ভ্রমন করতে থাকে। অদ্বিতীয় পরমাত্মা থেকে মায়ার দ্বারা সকল দ্বৈতের উদয়, আবার তাতেই পুনঃ লয় হয়। এইরুপ অনুসন্ধানের দ্বারা ভেদভ্রম নষ্ট হয়। হে প্রিয় উদ্ধব, বস্তুতঃ সংসারের অস্তিত্ব নেই। তবু যতক্ষন পর্যন্ত দেহ, ইন্দ্রিয় এবং প্রানের সঙ্গে আত্মার ভ্রান্তিজনিত সম্বন্ধ আছে, ততদিন অবিবেকী পুরুষের তা সত্যের মত স্ফুরিত হয়।হে উদ্ধব, অহংকারই (দেহে আমিত্ববোধ) শোক, হর্ষ, ভয়, ক্রোধ, লোভ, মোহ, স্পৃহা এবং জন্মমৃত্যুর শিকার হয়। আত্মার সঙ্গে এসবের কোন সম্বন্ধ নেই। হে উদ্ধব, আমাকে লাভ করার যতরকম সাধন আছে, তার মধ্যে আমি মনে করি যে মন, বাণী এবং শরীরের সমস্ত বৃত্তি দ্বারা সমস্ত প্রানীর মধ্যে আমারই ভাবনা করা অর্থাৎ “বাসুদেবঃ সর্বম্” দৃষ্টিতে সবকিছু দেখাই সমীচীন।.হরে কৃষ্ণ মহামন্ত্রের মহিমা অনন্য এবং খুবই শক্তিশালী, কেননা পরমেশ্বর ভগবান শ্রী কৃষ্ণ এবং হরিনাম এক ও অভিন্ন, কোন পার্থক্য নেই …. হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে.

(সংগৃহীত)

শ্রী কৃষ্ণের বাঁশি

শ্রীকৃষ্ণ তিন প্রকারের বাঁশী ব্যবহার করেন। তার একটিকে বলা হয় বেণু, অন্যটি মুরলী এবং তৃতীয়টি বংশী। বেণু অত্যন্ত ছোট, ছয় ইঞ্চির বেশী দীর্ঘ নয়, এবং তাতে ছয়টি ছিদ্র থাকে। মুরলীর দৈর্ঘ্য প্রায় আঠারো ইঞ্চি। তার একপ্রান্তে একটি ছিদ্র থাকে এবং তার গায়ে চারটি ছিদ্র থাকে। এই মুরলী অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর সুর সৃষ্টি করে। বংশী প্রায় পনেরো ইঞ্চি লম্বা, এবং তাতে নয়টি ছিদ্র থাকে। শ্রীকৃষ্ণ প্রয়োজন অনুসারে এই তিন রকমের বাঁশী বাজান। শ্রীকৃষ্ণের আর একটি বংশী আছে যা আরও লম্বা, যাকে বলা হয় মহানন্দ বা সম্মোহনী। তা যখন তার থেকেও লম্বা হয়, তখন বলা হয় আকর্ষণী। তা যখন তার থেকেও লম্বা হয় তখন তাকে বলা হয় আনন্দিনী। এই আনন্দিনী বংশীধ্বনি গোপ বালকদের অত্যন্ত প্রিয়। এর আর একটি নাম বংশুলী। এই বাঁশীগুলি কখনো কখনো মণিরত্ন খচিত থাকে, কখনো তা মর্মর দিয়ে তৈরী হয় এবং কখনো কখনো বাঁশ দিয়ে তৈরী হয়। বাঁশী যখন মণিরত্ন দিয়ে তৈরী হয় তখন তাকে বলা হয় সম্মোহনী। আর যখন তা স্বর্ণ দিয়ে তৈরি হয়, তাকে বলা হয় আকর্ষণী।
.
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে
.

ভগবান শিবের শতনাম

শিবের ১০৮টি নাম ও তার অর্থ —
১) শিব- কল্যাণ স্বরূপ
২) মহেশ্বর- মায়ার অধীশ্বর
৩) শম্ভু- আনন্দ স্বরূপ যাঁর
৪) পিনাকী- পিনাক অর্থাৎ ধনুক ধারণ করেছেন যিনি
৫) শশীশেখর- মস্তকে চাঁদকে ধারণ করেছেন যিনি
৬) বামদেব- অত্যন্ত সুন্দর স্বরূপ যাঁর
৭) বিরূপাক্ষ- বিচিত্র চোখ যাঁর (শিব ত্রিনেত্রের অধিকারী)
৮) কপর্দী- জটাধারণ করেছেন যিনি
৯) নীললোহিত- নীল ও লাল বর্ণ যাঁর
১০) শংকর- সবার কল্যাণ করেন যিনি
১১) শূলপাণি- হাতে ত্রিশূল যাঁর
১২) খটবাঙ্গি- খাটিয়ায় একটি পা রাখেন যিনি
১৩) বিষ্ণুবল্লভ- বিষ্ণুর অতিপ্রিয়
১৪) শিপিবিষ্ট- সিতুহায়ে প্রবেশ করেন যিনি
১৫) অম্বিকানাথ- দেবী দূর্গার স্বামী
১৬) শ্রীকণ্ঠ- সুন্দর কণ্ঠ যাঁর
১৭) ভক্তবৎসল- ভক্তদের অত্যন্ত স্নেহ করেন যিনি
১৮) ভব- সংসার রূপে প্রকট হন যিনি
১৯) শর্ব- কষ্ট নষ্ট করেন যিনি
২০) ত্রিলোকেশ- তিন লোকের যিনি প্রভু
২১) শিতিকণ্ঠ- সাদা কণ্ঠ যাঁর
২২) শিবাপ্রিয়- পার্বতীর প্রিয়
২৩) উগ্র- অত্যন্ত উগ্র রূপ যাঁর
২৪) কপালী- কপাল ধারণ করেন যিনি
২৫) কামারী- কামদেবের শত্রু, অন্ধকারকে পরাজিত করেছেন যিনি
২৬) সুরসুদন- দৈত্য অন্ধককে যিনি বধ করেছেন
২৭) গঙ্গাধর- যিনি গঙ্গাকে ধারণ করেছেন
২৮) ললাটাক্ষ- ললাটে চোখ যাঁর
২৯) মহাকাল- কালেরও কাল যিনি
৩০) কৃপানিধি- করুণার সাগর
৩১) ভীম- ভয়ঙ্কর রূপ যাঁর
৩২) পরশুহস্ত- হাতে পরশু ধারণ করেছেন যিনি
৩৩) মৃগপাণি- হাতে যিনি হরিণ ধারণ করেছেন
৩৪) জটাধর- জটা রেখেছেন যিনি
৩৫) কৈলাসবাসী- কৈলাসের নিবাসী
৩৬) কবচী- কবচ ধারণ করেছেন যিনি
৩৭) কঠোর- অত্যন্ত মজবুত দেহ যাঁর
৩৮) ত্রিপুরান্তক- ত্রিপুরাসুরকে বধ করেছেন যিনি
৩৯) বৃষাঙ্ক- বৃষ চিহ্নের ধ্বজা রয়েছে যাঁর
৪০) বৃষভারূঢ়- বৃষের উপরে সওয়ার যিনি
৪১) ভস্মোদ্ধুলিতবিগ্রহ- সারা শরীরে ভস্ম লাগান যিনি
৪২) সামপ্রিয়- সামগানের প্রেমী
৪৩) স্বরময়ী- সাতটি স্বরে যাঁর নিবাস
৪৪) ত্রয়ীমূর্তি- বেদরূপী বিগ্রহ করেন যিনি
৪৫) অনীশ্বর- যিনি স্বয়ং সকলের প্রভু
৪৬) সর্বজ্ঞ- যিনি সব কিছু জানেন
৪৭) পরমাত্মা- সব আত্মায় সর্বোচ্চ
৪৮) সোমসূর্যাগ্নিলোচন- চন্দ্র, সূর্য ও অগ্নিরূপী চোখ যাঁর
৪৯) হবি- আহূতি রূপী দ্রব্যের মতো
৫০) যজ্ঞময়- যজ্ঞস্বরূপ যিনি
৫১) সোম- উমা-সহ রূপ যাঁর
৫২) পঞ্চবক্ত্র- পঞ্চ মুখ যাঁর
৫৩) সদাশিব- নিত্য কল্যাণ রূপী
৫৪) বিশ্বেশ্বর- সমগ্র বিশ্বের ঈশ্বর
৫৫) বীরভদ্র- বীর হওয়া সত্ত্বেও শান্ত স্বরূপ যাঁর
৫৬) গণনাথ- গণদের স্বামী
৫৭) প্রজাপতি- প্রজার পালনকর্তা
৫৮) হিরণ্যরেতা- স্বর্ণ তেজ যাঁর
৫৯) দুর্ধর্ষ- কারও চাপের কাছে নত হন না যিনি
৬০) গিরীশ- পর্বতের স্বামী
৬১) গিরীশ্বর- কৈলাস পর্বতে শয়ন করেন যিনি
৬২) অনঘ- পাপরহিত
৬৩) ভুজঙ্গভূষণ- সাপের আভুষণ ধারণ করেন যিনি
৬৪) ভর্গ- পাপনাশক
৬৫) গিরিধন্বা- মেরু পর্বতকে যিনি ধনুক বানিয়েছেন
৬৬) গিরিপ্রিয়- পর্বত প্রেমী
৬৭) কৃত্তিবাসা- গজচর্ম পরিধান করেছেন যিনি
৬৮) পুরারাতি- পুরদের বিনাশ করেছেন যিনি
৬৯) ভগবান- সর্বসমর্থ ঐশ্বর্য সম্পন্ন
৭০) প্রমথাধিপ- প্রমথগণের অধিপতি
৭১) মৃত্যুঞ্জয়- মৃত্যুকে জয় করেছেন যিনি
৭২) সূক্ষ্মতনু- সূক্ষ্ম শরীর যাঁর
৭৩) জগদ্ব্যাপী- জগতে ব্যাপ্ত বাস যাঁর
৭৪) জগদ্গুরু- জগতের গুরু
৭৫) ব্যোমকেশ- আকাশের মতো চুল যাঁর
৭৬) মহাসেনজনক- কার্তিকেয়র পিতা
৭৭) চারুবিক্রম- সুন্দর পরাক্রম যাঁর
৭৮) রুদ্র- ভয়ানক
৭৯ ভূতপতি- ভূতপ্রেত বা পঞ্চভূতের অধিপতি
৮০) স্থাণু- স্পন্দন বিহিন কূটস্থ রূপ যাঁর
৮১) অহির্বুধ্ন্য- কুণ্ডলিনী ধারণ করেছেন যিনি
৮২) দিগম্বর- নগ্ন, আকাশরূপী বস্ত্র ধারণকারী
৮৩) অষ্টমূর্তি- আটটি রূপ আছে যাঁর
৮৪) অনেকাত্মা- অনেক রূপ ধারণ করতে পারেন যিনি
৮৫) সাত্বিক- সত্ব গুণ যাঁর
৮৬) শুদ্ধবিগ্রহ- শুদ্ধমূর্তি যাঁর
৮৭) শাশ্বত- নিত্য থাকেন যিনি
৮৮) খণ্ডপরশু- ভাঙা পরশু ধারণ করেছেন যিনি
৮৯) অজ- জন্ম রহিত
৯০) পাশবিমোচন- বন্ধন থেকে মুক্ত করেন যিনি
৯১) মৃড- সুখস্বরূপ যাঁর
৯২) পশুপতি- পশুদের অধিপতি
৯৩) দেব- স্বয়ং প্রকাশরূপ যিনি
৯৪) মহাদেব- দেবতাদেরও দেবতা
৯৫) অব্যয়- খরচ হওয়া সত্ত্বেও ঘাটতি হয় না যাঁর
৯৬) হরি- বিষ্ণুস্বরূপ
৯৭) পূষদন্তভিৎ- পূষার দন্ত যিনি উপড়ে ফেলেছিলেন
৯৮) অব্যগ্র- কখনও ব্যথিত হন না যিনি
৯৯) দক্ষাধ্বরহর- দক্ষের যজ্ঞ নষ্ট করেছিলেন যিনি
১০০) হর- পাপ ও তাপ হরণ করেন যিনি
১০১) ভগনেত্রভিদ্- ভগ দেবতার চোখ নষ্ট করেছিলেন যিনি
১০২) অব্যক্ত- ইন্দ্রিয়ের সামনে প্রকট হন না যিনি
১০৩) সহস্রাক্ষ- হাজারটি চোখ যাঁর
১০৪) সহস্রপাদ- হাজার পদ বিশিষ্ট
১০৫) অপবর্গপ্রদ- কৈবল্য মোক্ষ দান করেন যিনি
১০৬) অনন্ত- দেশকালবস্তু রূপী পরিছেদ রহিত
১০৭) তারক- সবার তারণ করেন যিনি
১০৮) পরমেশ্বর- সর্বাধিক পরম ঈশ্বর
শ্রাবণ মাস, শ্রাবণ সোমবার, প্রদোষ, শিবরাত্রি অথবা অন্যান্য সাধারণ সোমবারে এই নাম স্মরণ করলে সহজেই শিবের আশীর্বাদ লাভ করা যায়।
ভোলেনাথকে প্রসন্ন করার জন্য, এটি একটি সহজ-সরল উপায়।
.
ॐ নমঃ শিবায়
.
(সংগৃহীত)