🌺☘️ Mahashivratri ((Magar of Shiv and Parvati in one form))

#MahaShivaratri Merger of Shiva and Parvati in one form.

In the Devi Mahabhagwatam, it is said Ma Parvati was conscious of the events of Daksha Yagna and the consequences which kept Lord Shiva in seclusion from the material world. She wanted to marry him but when she saw him in intense states of samadhi, she understood he has no intention left to interact with the dualistic world of desires and consequences. Even when the God of desire, Kamadeva tried to interfere here, he was burned to ashes by Shiva. Devi is the mother principle of existence, she even mothered time, space and all which exists as matter or non-matter. The creation is an outcome of her desire, and she desired to merge Shiva, the father principle which mostly remains static within her to make him dynamic once again. She worshipped him, sang songs in her melodious voice and danced in lasya to woo his heart. After observing his unshakable intensity in the state of samadhi, she decided to become more intense than him. Samadhi means total dissolution of one’s self in consciousness, and here Mahadeva was sitting in front of her in a form but had dissolved all associations of his form within his consciousness, which made him inert.

Ma Parvati then performed penance of her own, her intensity was releasing intense shock waves in the cosmos. Unable to bear the heat of her intense samadhi, the heavenly deities prayed to her and Shiva for protection otherwise all which exists as dual will merge within the non-dual aspect of Devi. Her intense energy shock waves were also hitting Shiva and he woke up and realised the play/Leela of Devi. Shiva then approached the meditating Devi and acknowledged her love. He merged within her and she merged within him and were known as ardhanaari. As formless Parabramha, they are always in the union, only to demonstrate the significance of this union to mortals they’ve appeared in separate forms of Shankara and Parvati. In union, all dualities, uproars and unawareness are silenced and only the oneness of Shakti (endless play of universal energy) with Shiva (the forever conscious one) remains.

Sri Matre Namaha! Aum Namaha Shivaya

collected from different sources

published by Shruti Adhya Kundu marketing officer of SYCN

🌼🌸দেবী সরস্বতীর আবির্ভাব কাহিনী🌸🌼

সরস্বতী দেবী কে?
(সনাতন সন্দেশ)
সরস্বতী শব্দটি ‘সার’ এবং ‘স্ব’ দুটি শব্দের সমন্বয়ে গঠিত। সেই অনুসারে সরস্বতী শব্দের অর্থ যিনি কারো মধ্যে সারজ্ঞান প্রকাশ করেন। আবার সরস্বতী শব্দটি সংস্কৃত ‘সুরস বতি’ শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ হচ্ছে জলের আধার। সরস্বতী সাক্ষাৎ দেবী মূর্তি এবং নদী-দুইরূপেই প্রকটিত। ঋগবেদে(২/৪১/১৬) বর্ণনা করা হয়েছে-

অম্বিতমে নদীতমে সরস্বতী।

অপ্রশস্তা ইব স্মসি প্রশস্তিমন্ব নস্কৃধি।।

অর্থাৎ “মাতৃগণের মধ্যে শ্রেষ্ট, নদীগণের মধ্যে শ্রেষ্ট, দেবীগণের মধ্যে শ্রেষ্ট হে সরস্বতী, আমরা অসমৃদ্ধের ন্যায় রয়েছি, আমাদের সমৃদ্ধশালী করো।” সরস্বতী দেবী জ্ঞান, সঙ্গীত, কলা এবং বিদ্যার দেবী।

সরস্বতী দেবীর আবির্ভাব

ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ অনুযায়ী গোলোকে শ্রীকৃষ্ণের কন্ঠদেশ থেকে দেবী সরস্বতী উদ্ভূতা হয়েছিলেন। চৈতন্য ভাগবত (আদিলীলা ২/৯-১৪) তে বর্ণনা করা হয়েছে-

পূর্বে ব্রহ্মা জন্মিলেন নাভিপদ্ধ হৈতে।

তথাপিও শক্তি নাই কিছুই দেখিতে।।

তবে যবে সর্ববারে লইলা শরণ,

তবে প্রভু কৃপায় দিলেন দরশন।

তবে কৃষ্ণ কৃপায় স্ফুরিত সরস্বতী।

তবে সে জানিলা সর্ব অবতার স্থিতি।।

এক সময় শ্রীব্রহ্মা সৃষ্টিকার্যের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। শান্তভাবে ধ্যানস্থ আছেন। কী করবেন, কী করা উচিত চিন্তা করছেন। এমন সময় তাঁর শরীর থেকে এক সুন্দরী দেবীমূর্তি প্রকাশিত হয়। দেবী ব্রহ্মাজীকে বললেন, হে বিধাতা আমি আপনার থেকে প্রকাশিত হলাম। এখন দয়া করে আপনি আমার স্থান এবং কী কর্ম তা নির্দেশ করুন। ‘ব্রহ্মা বললেন “তোমার নাম সরস্বতী। তুমি অবস্থান করো সকলের জিহ্বাতে বিশেষভাবে সুশিক্ষিত ব্যক্তিদের জিহ্বাতে তুমি নৃত্য করো।পৃথিবীতে তুমি একটি নদীরূপে প্রকাশিত হও।”
দেবী সরস্বতী প্রশ্ন করলেন- হে বিধাতা, আপনি বললেন, আমি সবার জিহ্বাতে অবস্থান করবো; আবার বললেন, নদীরূপে থাকবো। এর ব্যাখ্যা কী? ব্রহ্মা বললেন-সরস্বতী তুমি যখন লোকের জিহ্বাতে অবস্থান করবে, তথন লোকের জিহ্বা থেকে বাকশক্তি হবে। তাই তোমার নাম বাকদেবী। তুমি আমার মুখ থেকেই প্রকাশিত। তুমি পবিত্রবতী। জগৎ-সংসারে বহু অপবিত্র মানসিকতা সম্পন্ন জীব থাকবে, অপবিত্র মানুষের জিহ্বায় কদর্য বাক্য স্ফুরিত হবে, সেসব জিহ্বাতে তুমি অবস্থান করে সুখি হতে পারবে না।

হে সরস্বতী, তুমি সাক্ষাৎ বুদ্ধি স্বরূপিণী। তুমি বলো, কোথায় তুমি আনন্দ লাভ করবে? সরস্বতী বললেন-যে সমস্ত ব্যক্তি পরম সুন্দর পরমেশ্বর ভগবানের আরাধনা করেন, তাদের জিহ্বায় সর্বদা পরম প্রভুর নাম কীর্তিত হবে। আমি তাঁদের পবিত্র জিহ্বায় অধিষ্ঠান করবো।

ব্রহ্মাজী ব্রহ্মসংহিতায় বর্ণনা করেছেন-সেই পরম সুন্দর ভগবান কে? তিনি বর্ণনা করেছেন, “সেই পরমেশ্বর ভগবান হচ্ছেন শ্রীকৃষ্ণ। তাঁর রূপ সচ্চিদানন্দ। তিনি অনাদির আদি এবং সর্বকারণের পরম কারণ। সেই আদি এবং সর্বকারণের পরম কারণ। সেই আদি পুরুষ গোবিন্দকে আমি ভজনা করি।” কলিসন্তরণ উপনিষদে বর্ণনা করা হয়েছে-

হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে।
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে।।

ইত ষোড়শকং নাম্নাং কলিকল্মাষ নাশনম্।

নাতো পরতর উপায় সর্ববেদেষু দৃশ্যতে।।

শ্রীমদ্ভাগবতে (১১/৫/৩২) বর্ণনা করা হয়েছে-

কৃষ্ণবর্ণ তিষাকৃষ্রং সাঙ্গোপাঙ্গোঅস্ত্রপার্ষদম্।

যজ্ঞৈঃ সঙ্কীর্তনপ্রায়ৈর্যজন্ত হি সুমেধসঃ।।

কলিযুগে সুমেধাসম্পন্ন মানুষেরা কৃষ্ণনাম কীর্তনের দ্বারা শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা করেন।
পুরাণে সরস্বতী

বেদের যজ্ঞধাত্রী সরস্বতী পুরাণে ধরা দিয়েছেন বিচিত্র লীলাময়ী রূপে। অনেকগুলো পুরাণেই আমরা সরস্বতীর সাক্ষাৎ পাই। কিন্তু বৈদিককালের সরস্বতী মৌলিক ভাবনিচয় পুরাণের বর্ণনায় কোথাও ক্ষুণ্ণ হয়নি বরং হয়েছে অধিকতর সুপ্রকাশিত। দেবী ভাগবতে (৯/৭) বলেন, দেবী সরস্বতী আদ্যা প্রকৃতির অধিষ্ঠাত্রী দেবতা। তিনি বোধস্বরূপিণী, সমুদয় সংশয়ছেদনকারিণী এবং সর্বসিদ্ধি প্রদায়িণী। সঙ্গীতের সন্ধান ও তাল প্রভৃতির কারণ স্বরূপিণীও তিনিই।

দেবী সরস্বতীর উপদেশ

মহর্ষি কশ্যপের এক বংশের ছিলেন তার্ক্ষ্য। সেই তার্ক্ষ্য ঋষি একদিন তপস্যাকালে দেবী সরস্বতীর সাক্ষাৎ পেলেন। শ্বেতবসনা, বীণাধারিণী, দুগ্ধবর্ণা দেবী সরস্বতী। ঋষি তাঁকে প্রণতি নিবেদন করলেন।

দেবী বললেন, হে বৎস, তোমার মনে অনেক প্রশ্ন আছে বলে জানি। তুমি যদি এখন কিছু জানতে চাও, তবে বলো। তার্ক্ষ্য ঋষি জানালেন হে ভদ্রে, দয়া করে বলুন ইহলোকে মানুষের কল্যাণ কীভাবে হবে? দেবী সরস্বতী বললেন, হে তপবোন, যে ব্যক্তির হৃদয় শুদ্ধ, শাস্ত্র নির্দেশ যে যত্ন সহকারে পালন করে, তারই যথার্থ কল্যাণ হয়। কী কর্ম করলে মানুষ এ জীবনের পর উর্ধ্বগতি বা নিম্নগতি লাভ করে? যদি কোনো ব্যক্তি অন্য সাত্ত্বিক ব্যক্তিকে ধন দান, আশ্রয় দান, চিকিৎসা দান, অন্ন দান, বস্ত্র প্রভৃতি দান করে তবে সুখময় স্বর্গীয় গ্রহলোকে উপনীত হবে। যে ব্যক্তি কাম ও ক্রোধ দ্বারা নিরন্তর মোহাচ্ছন্ন থাকে, সে ঘোরতর নরকলোকে নিপতিত হবে।

হে দেবী, কারা বৈকুণ্ঠ বা গোলোক ধামে উপনীত হতে পারবে? যাঁরা যজ্ঞাবশেষ ভোজী অর্থাৎ শ্রীহরির মহাপ্রসাদ যাঁরা ভোজন করেন, যাঁরা সত্যব্রত অর্থাৎ ভগবৎ-ভক্তি অনুশীলন করেন, যাঁরা শ্রদ্ধাবান অর্থাৎ ভগবান ও ভক্তের নির্দেশ মেনে চলতে আগ্রহান্বিত, যাঁরা নিরহংকার অর্থাৎ ভগবৎ সম্বন্ধ ছাড়া অন্য কারো সম্বন্ধে আকৃষ্ট নন, তাঁরাই শ্রীহরির সেবা করার উপযুক্ত হন। পরিণামে তাঁরা অতি পবিত্র ধাম গোলোক লাভ করেন এবং পরম সত্য স্বরূপ শ্রীকৃ্ষ্ণকে তাঁরা নিরীক্ষণ করে থাকেন।
ঋষি তার্ক্ষ্য আবার স্বরসতী দেবীকে প্রশ্ন করলেন, হে পরমাত্মারূপা প্রজ্ঞা, আপনি কে? দেবী সরস্বতী বললেন, আমি পরাপর বিদ্যারূপা দেবী। অর্থাৎ পরা বিদ্যা হচ্ছে ভগবান ও ভক্তি সম্বন্ধীয় বিদ্যা এবং অপরা বিদ্যা হচ্ছে জড়জগতের কর্মকান্ডীয় বিদ্যা। এ উভয় বিদ্যাই আমি জিবকে প্রদান করি

হে ঋষি, যারা বহু বহু বর্ষব্যাপী সুখ ভোগের উদ্দেশ্যে উচ্চতর লোক ব্রহ্মলোক, স্বর্গলোক ইত্যাদি গ্রহে যাওয়ার জন্য কামনা করে, তাদের আমি দান ব্রত ইত্যাদির নানাবিধ পুণ্য পবিত্র কর্মে প্রবৃত্ত করি। আর যাঁরা ভগবদ্ধধামে গোলোকে বৈকুণ্ঠে যাত্রা করবার আকাঙ্ক্ষা করেন, তাঁদের আমি ভক্তি বিদ্যা দান করি।

তার্ক্ষ্য বললেন, হে দেবী সকল পন্ডিত ব্যক্তি বিশ্বস্ত মনে যাকে শ্রেয় জ্ঞান করে ইন্দ্রিয় সংযম প্রভৃতি কঠোর ব্রত অনুষ্ঠান করেন, সেই দুঃখশোক শূন্য মোক্ষ কী? সাংখ্য শাস্ত্রে যাঁকে চিরন্তন ও শ্রেষ্ঠ বলে নির্দেশ করে, সেই পরমাত্মা কে? আমি জানি না, তাই আপনি দয়া করে সেই বিষয়ে উপদেশ দিন।

দেবী সরস্বতী বললেন, হে তার্ক্ষ্য, বিচক্ষণ পন্ডিত ব্যক্তিরা শোকরহিত ও বিষয় বাসনা শূন্য হয়ে ব্রতপরায়ণ হন এবং ভক্তিযোগে যে আদি পুরুষকে প্রাপ্ত হয়ে থাকেন, তিনি হচ্ছে সেই পরম ব্রহ্ম, পরমাত্মা পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণ। হে ঋষি, যে স্থানে ভক্তরা সেই পরম পুরুষ শ্রীকৃষ্ণের প্রীতির উদ্দেশ্যে যাবতীয় কর্ম করেন, সেই স্থান আমার আশ্রয়স্বরূপ।

সরস্বতী পূজার বর্তমান প্রেক্ষাপট

বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে, মানুষ ধর্মের নামে নিজের ইন্দ্রিয় তৃপ্তিতে ব্যস্ত। এমনকি মানুষ মনে করছে তারা ধর্ম করছে, কিন্তু দেব-দেবীদের সামনে যে আচরণ করছে, তা এমনকি সভ্য সমাজে অপাঙক্তেয়। যুবক-যু্বতী, মধ্য বয়স্করা বলিউডের গানের তালে তালে নিজেদের ইন্দ্রিয় তোষণের চেষ্টা করছে, আর ভাবছে সে মায়ের বা দেবীর আরাধনা করছে। যে ধরনের আচরণ সে এমনকি নিজের মায়ের সম্মুখে করতে পারে না, সেই অসদাচরণ জগজ্জননী মায়ের তথাকথিত পূজার ছলে করছে।

এমনকি শোনা যায়, মায়ের পূজার জন্য যে অর্থ সংগ্রহ করনে, তা তারা নিজেদের ইন্দ্রিয় তোষণের জন্য বিভিন্ন জাগতিক (তথা যৌন উদ্দীপক) গানের আসরের আয়োজন করছে। কখনো কখনো মদ্যপানের জন্যও ব্যবহৃত হচ্ছে। তাই যথার্থ মনোভাব ও ভাগগাম্ভীর্য নিয়ে পূজা সম্পাদন করা। সর্বতোভাবে সন্তুষ্ট করে না এমন সব গান বা কার্য থেকৈ সম্পূর্ণরূপে বিরত থাকা। পূর্বেই বর্ণনা করা হয়েছে, কোন কার্য মাতা সরস্বতীকে সন্তুষ্ট করতে পারে। আমরা পর্যায়ক্রমে বর্ণনা করব কোন মনোভাবে আমাদের মায়ের উদ্দেশ্যে প্রার্থনা করা উচিত, কোন বাহ্যিক বিষয় মায়ের প্রার্থনায় গুরুত্ব বহন করে না, কোন প্রতিমায় মা অবস্থান গ্রহণ করেন।
সরস্বতী পূজা কি লৌকিক প্রথা?

আমরা বেশির ভাগই ধর্ম করি, পূর্বপুরুষের ধারা অনুযায়ী অথবা সকল কর্মের ফল লাভের জন্য অথবা না বুঝে আনন্দ পাই বলে পূজার লৌকিক প্রয়াস করি। এধরনের প্রয়াসের ফলে মনের শান্তি অনুভব হয় বটে; কিন্তু তা কি আমাদের বিদ্যা লাভের প্রকৃত উদ্দেশ্যে সাধিত হয়? এ ধরণের লৌকিক প্রয়ােসই লৌকিকতা বা প্রথাগত ধর্মাচার বলে পরিগণিত হয়।

উইকিপিডিয়া-এর সংজ্ঞানুযায়ী, লৌকিকতা ও কর্তব্যবোধে আচরিত অনুভূতিবিহীন ধর্মাচরণকে Ritual বলা হয়। আমরা হয়তো বেশির ভাগই লৌকিকতার কারণেই পূজা করছি; কিন্তু কীভাবে ধর্মাচরণ করলে বা পূজা করলে লৌকিকতা মুক্ত হয়ে প্রকৃত অর্থেই বিদ্যা লাভের পথে এগিয়ে যেতে পারব, সেভাবে এগিয়ে যাওয়া উচিত। প্রার্থনা বলতে শাস্ত্রে বলা হয়েছে-“প্রার্থনা হলো এমন একটি কার্য যার দ্বারা একজন ব্যক্তি তার মন ও চিত্তকে ভগবানে/দেবতার কাছে নির্দিষ্ট করতে পারে। প্রার্থনার মাধ্যমে আমরা ভগবানের/দেবতার কাছে আমাদের অসহায়ত্ব ও ক্ষুদ্রত্ব স্বীকার করে তাঁর চরণে সমর্পিত হই। প্রার্থনা মগ্ন হওয়ার অর্থ, পরমেশ্বর ভগবান/আরাধ্য দেবতার কথা স্মরণ করা, তাঁকে দর্শন করা, তার সঙ্গে কথা বলা অথবা তাঁর বিষয়ে চিন্তা করা। শ্রীমদ্ভাগবতে প্রার্থনায় আমাদের যা করতে বলঅ হয়েছে তা হলো:

১. তাঁর মহিমা কীর্তন, ২. কৃতজ্ঞতা স্বীকার, ৩. হৃদয়ের আকুলতা, ৪. ক্ষমা প্রার্থনা

প্রার্থনা আমাদের হৃদয় থেকে উৎসারিত হওয়া উচিত। যদি প্রার্থনা হৃদয় থেকে না আসে, তবে সেটা শুধুমাত্র মুখের কসরত ছাড়া আর কিছু হবে না। প্রাথমিক অবস্থায় হৃদয় থেকে প্রার্থনা করা কঠিন হতে পারে, তাই ভগবান/দেবতার কাছে আমাদের বিনীত হওয়ার অক্ষমতার জন্য অনুতপ্ত হয়ে বিনীত প্রার্থনা করা উচিত।

(লেখক : শ্রীপাদ মিত্রগোপা কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী)
(সংগ্রহীত)সংগৃহীত

Published by SHRUTI ADHYA KUNDU MARKETING OFFICER OF SYCN.

🌺🌺 দেবী ছিন্নমস্তার আবির্ভাব কাহিনী🌺🌺

আজ দেবী ছিন্নমস্তার আবির্ভাব তিথি।

 

‘নারদপঞ্চরাত্র’ শাস্ত্র মতে ছিন্নমস্তা দেবীর আবির্ভাবের একটি কাহিনী আছে।

 

একদা দেবী পার্বতী তাঁর দুই সহচরী জয়া ও বিজয়াকে নিয়ে মন্দাকিনীতে স্নান করতে গিয়েছিলেন। স্নানান্তে জয়া ও বিজয়ার ক্ষুধার উদ্রেগ হওয়ায় দেবী পার্বতীর কাছে আহার চাইলেন। দেবী বললেন – কৈলাসে গিয়ে আহার প্রদান করবো। কিন্তু বারবার তারা ক্ষুধার কথা জানিয়ে প্রার্থনা করলে এই জয়া-বিজয়া ডাকিনী-বর্ণিনী রূপে মায়ের দুপাশ থেকে খাদ্য প্রার্থনা করলে করুণাময়ী জননী তাদের এই প্রার্থনা শুনে নিজের বাম নখাগ্র দিয়ে নিজেরই মস্তক ছিন্ন করে সেটি নিজের বামকরতলে ধারণ করলেন। ছিন্ন মস্তক ও কণ্ঠ থেকে ত্রিধারায় রক্তস্রোত প্রবাহিত হতে লাগল। বাম ও দক্ষিণ দিক থেকে নির্গত দুটি ধারা দুই সহচরী জয়া ও বিজয়ার ভয়ঙ্করী মূর্তি ডাকিনী ও বর্ণিনীর ঊর্ধ্বমুখ লেলিহান জিহ্বায় সংযোজিত হল। আর মধ্যধারাটি নিজ ছিন্ন মুখে পড়তে লাগল। এই ভাবে নিজ মুণ্ড ছিন্ন করে সহচরীদের পরিতৃপ্ত করেছিলেন বলে তাঁর নাম হল ছিন্নমস্তা।

 

দেবীর নিজ রুধির ধারা এভাবে গ্রহণ করতে দেখে ত্রিলোক হলেন স্তম্ভিত। দেবতারাও বিকট মূর্তি দেখে ভগবতীকে প্রণাম জানালেন। সন্তানদের ক্ষুধা তৃষ্ণা দূর করতে তিনি স্বেচ্ছায় সানন্দে নিজ মুণ্ড ছিন্ন করে নিজ রক্তে তাদের পরিতৃপ্ত করেন। সহচরীগণ তৃপ্ত হলে দেবী কৈলাসে ফিরে গেলেন। পুনরায় তিনি হলেন শিব জায়া গৌরী।

 

দশমহাবিদ‍্যা দেবীদের মধ্যে ষষ্ঠ মহাবিদ্যা দেবী হলেন ছিন্নমস্তা। ছিন্নমস্তাকে উগ্র মহাবিদ্যাও বলা হয়। ‘দশমহাবিদ্যা’র ভয়ঙ্করী রূপের প্রকাশ হয়েছে ‘দেবী ছিন্নমস্তা’য়।

 

ছিন্নমস্তা দেবী প্রত্যালীঢ় ভঙ্গীতে দন্ডায়মানা,গলায় তার নাগ যজ্ঞের উপবীত। সর্বদা ছিন্ন মস্তক ও খড়্গে ভূষিতা, দিগবসনা, নিজ কবন্ধের দ্বারা সানন্দে অমৃতকল্প রক্তধারা পানরতা, সর্পের মুকুট মনি দ্বারা ভূষিতা, ত্রিনয়না, বক্ষদেশ পদ্মে ভূষিতা, বিপরীত বিহারে রতা এবং দেবীর গাত্র বর্ণ জবা ফুলের ন্যায়। পীনোন্নত পয়োধরা, সদা ষোড়শ বর্ষীয়া। তাঁর একদিকে মুক্তকেশী লোহিতসৌম্যা, দিগম্বরী বর্ণিনী ও অন্যদিকে প্রলয় অগ্নির মতো ডাকিনী শক্তি। এঁরা দেবীর ছিন্ন কন্ঠের রক্তপানে রতা। দেবী ছিন্নমস্তার পদতলে সকাম রত মদন ও রতি দেবী থাকেন।

 

ছিন্নমস্তা দেবীর এই গুপ্ত রূপে বহু তত্ত্বকথা লুক্কায়িত- যা কেবল গুরু পরম্পরাতে গুপ্ত। ছিন্নমস্তা দেবী প্রত্যালীঢ় ভঙ্গিতে দাঁড়িয়ে পদতলে সকামরত মদন ও রতিকে দলন করেন। এই রূপ ব্রহ্মচর্য বৈরাগ্য মূর্তি। ছিন্নমস্তা দেবীকে ব্রহ্মচর্যস্বরূপিণী দেবী বলা হয়। এই দেবীর পূজা সাধারণ কেও করতে পারেন না। কেবল তন্ত্র সাধকেরা তন্ত্র মতে দেবীর পূজা করেন। বিভিন্ন দেবী মন্দিরের দশমহাবিদ্যার সঙ্গে তাঁর পূজা প্রচলিত। তবে গৃহস্থবাড়িতে তাঁর পূজা করা হয় না। কেবলমাত্র তান্ত্রিক, যোগী ও সর্বত্যাগীগণ বীরাচারী তান্ত্রিক মতে তাঁর পূজা করে থাকেন।

 

ছিন্নমস্তার শতনাম ও সহস্রনাম স্তোত্রে দেবীর ভীষণা প্রকৃতি ও ক্রোধের উল্লেখ আছে। এই সকল নামে তাঁকে প্রেতসেবিতা ও রক্তপানকারিণী রূপে বর্ণনা করা হয়েছে। তিনি নররক্ত ও নরমাংসে প্রীতা হন। দেহরোম, মাংস ও ভয়ংকর মন্ত্রে তাঁর পূজা করা হয়।

 

তন্ত্রসাধকগণ সিদ্ধি বা অলৌকিক ক্ষমতা লাভের জন্য ছিন্নমস্তার পূজা করেন। ছিন্নমস্তার মন্ত্র শ্রীঁ ক্লীঁ হ্রীঁ ঐঁ বজ্রবৈরোচনীয়ে হুঁ হুঁ ফট্ স্বাহা নারী বশীকরণের জন্য ব্যবহৃত হয়। তাঁর মন্ত্র কাউকে মন্ত্রচালিত করা বা কারোর ক্ষতি করার জন্যও ব্যবহার করা হয়। কাব্যশক্তি, সুস্থতা, শত্রুবিজয়, বিঘ্নোপসারণ, রাজপ্রসাদ লাভ, অন্যকে আকর্ষণ, শত্রুরাজ্য জয় ও মোক্ষলাভ – মহাবিদ্যা আরাধনার এই সকল উদ্দেশ্যেও ছিন্নমস্তার পূজা করা হয়।

 

‘তন্ত্রশাস্ত্র’ অনুসারে অর্ধরাত্রে দেবীর স্বরূপ কল্পনা করে নিষ্ঠার সঙ্গে ‘ছিন্নমস্তার ধ্যান’ করলে সাধক বা সাধিকা ‘সরস্বতী সিদ্ধ’ হন। ‘শত্রুবিজয়’, ‘রোগমুক্তি’, ‘রাজ্যপ্রাপ্তি’ এবং ‘দুর্লভ মোক্ষপ্রাপ্তি’র জন্য ‘ছিন্নমস্তার ধ্যান ও পূজা’ অত্যন্ত ফলদায়ক।

 

মা ছিন্নমস্তার মন্ত্র —

 

শ্রীঁ ক্লীঁ হ্রীঁ ঐঁ বজ্রবৈরোচনীয়ে হুঁ হুঁ ফট্ স্বাহা।

 

আজ আবির্ভাব তিথিতে মা ছিন্নমস্তা সবার মঙ্গল করুন।

 

.

 

জয় মা  সংগৃহিত  (published by SHRUTI ADHYA KUNDU MARKETING OFFICER OF SYCN ) 

 

.