<Sri Yoga Center Kunarpur – Vedic Yoga, Indology & Cultural Research ="https://gmpg.org/xfn/11"> Sri Yoga Center Kunarpur – Vedic Yoga, Indology & Cultural Research ধার্মিক - Sri Yoga Center Ashram's Blog - Page 17

শ্রী কৃষ্ণের বাঁশি

শ্রীকৃষ্ণ তিন প্রকারের বাঁশী ব্যবহার করেন। তার একটিকে বলা হয় বেণু, অন্যটি মুরলী এবং তৃতীয়টি বংশী। বেণু অত্যন্ত ছোট, ছয় ইঞ্চির বেশী দীর্ঘ নয়, এবং তাতে ছয়টি ছিদ্র থাকে। মুরলীর দৈর্ঘ্য প্রায় আঠারো ইঞ্চি। তার একপ্রান্তে একটি ছিদ্র থাকে এবং তার গায়ে চারটি ছিদ্র থাকে। এই মুরলী অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর সুর সৃষ্টি করে। বংশী প্রায় পনেরো ইঞ্চি লম্বা, এবং তাতে নয়টি ছিদ্র থাকে। শ্রীকৃষ্ণ প্রয়োজন অনুসারে এই তিন রকমের বাঁশী বাজান। শ্রীকৃষ্ণের আর একটি বংশী আছে যা আরও লম্বা, যাকে বলা হয় মহানন্দ বা সম্মোহনী। তা যখন তার থেকেও লম্বা হয়, তখন বলা হয় আকর্ষণী। তা যখন তার থেকেও লম্বা হয় তখন তাকে বলা হয় আনন্দিনী। এই আনন্দিনী বংশীধ্বনি গোপ বালকদের অত্যন্ত প্রিয়। এর আর একটি নাম বংশুলী। এই বাঁশীগুলি কখনো কখনো মণিরত্ন খচিত থাকে, কখনো তা মর্মর দিয়ে তৈরী হয় এবং কখনো কখনো বাঁশ দিয়ে তৈরী হয়। বাঁশী যখন মণিরত্ন দিয়ে তৈরী হয় তখন তাকে বলা হয় সম্মোহনী। আর যখন তা স্বর্ণ দিয়ে তৈরি হয়, তাকে বলা হয় আকর্ষণী।
.
হরে কৃষ্ণ হরে কৃষ্ণ কৃষ্ণ কৃষ্ণ হরে হরে
হরে রাম হরে রাম রাম রাম হরে হরে
.

ভগবান শিবের শতনাম

শিবের ১০৮টি নাম ও তার অর্থ —
১) শিব- কল্যাণ স্বরূপ
২) মহেশ্বর- মায়ার অধীশ্বর
৩) শম্ভু- আনন্দ স্বরূপ যাঁর
৪) পিনাকী- পিনাক অর্থাৎ ধনুক ধারণ করেছেন যিনি
৫) শশীশেখর- মস্তকে চাঁদকে ধারণ করেছেন যিনি
৬) বামদেব- অত্যন্ত সুন্দর স্বরূপ যাঁর
৭) বিরূপাক্ষ- বিচিত্র চোখ যাঁর (শিব ত্রিনেত্রের অধিকারী)
৮) কপর্দী- জটাধারণ করেছেন যিনি
৯) নীললোহিত- নীল ও লাল বর্ণ যাঁর
১০) শংকর- সবার কল্যাণ করেন যিনি
১১) শূলপাণি- হাতে ত্রিশূল যাঁর
১২) খটবাঙ্গি- খাটিয়ায় একটি পা রাখেন যিনি
১৩) বিষ্ণুবল্লভ- বিষ্ণুর অতিপ্রিয়
১৪) শিপিবিষ্ট- সিতুহায়ে প্রবেশ করেন যিনি
১৫) অম্বিকানাথ- দেবী দূর্গার স্বামী
১৬) শ্রীকণ্ঠ- সুন্দর কণ্ঠ যাঁর
১৭) ভক্তবৎসল- ভক্তদের অত্যন্ত স্নেহ করেন যিনি
১৮) ভব- সংসার রূপে প্রকট হন যিনি
১৯) শর্ব- কষ্ট নষ্ট করেন যিনি
২০) ত্রিলোকেশ- তিন লোকের যিনি প্রভু
২১) শিতিকণ্ঠ- সাদা কণ্ঠ যাঁর
২২) শিবাপ্রিয়- পার্বতীর প্রিয়
২৩) উগ্র- অত্যন্ত উগ্র রূপ যাঁর
২৪) কপালী- কপাল ধারণ করেন যিনি
২৫) কামারী- কামদেবের শত্রু, অন্ধকারকে পরাজিত করেছেন যিনি
২৬) সুরসুদন- দৈত্য অন্ধককে যিনি বধ করেছেন
২৭) গঙ্গাধর- যিনি গঙ্গাকে ধারণ করেছেন
২৮) ললাটাক্ষ- ললাটে চোখ যাঁর
২৯) মহাকাল- কালেরও কাল যিনি
৩০) কৃপানিধি- করুণার সাগর
৩১) ভীম- ভয়ঙ্কর রূপ যাঁর
৩২) পরশুহস্ত- হাতে পরশু ধারণ করেছেন যিনি
৩৩) মৃগপাণি- হাতে যিনি হরিণ ধারণ করেছেন
৩৪) জটাধর- জটা রেখেছেন যিনি
৩৫) কৈলাসবাসী- কৈলাসের নিবাসী
৩৬) কবচী- কবচ ধারণ করেছেন যিনি
৩৭) কঠোর- অত্যন্ত মজবুত দেহ যাঁর
৩৮) ত্রিপুরান্তক- ত্রিপুরাসুরকে বধ করেছেন যিনি
৩৯) বৃষাঙ্ক- বৃষ চিহ্নের ধ্বজা রয়েছে যাঁর
৪০) বৃষভারূঢ়- বৃষের উপরে সওয়ার যিনি
৪১) ভস্মোদ্ধুলিতবিগ্রহ- সারা শরীরে ভস্ম লাগান যিনি
৪২) সামপ্রিয়- সামগানের প্রেমী
৪৩) স্বরময়ী- সাতটি স্বরে যাঁর নিবাস
৪৪) ত্রয়ীমূর্তি- বেদরূপী বিগ্রহ করেন যিনি
৪৫) অনীশ্বর- যিনি স্বয়ং সকলের প্রভু
৪৬) সর্বজ্ঞ- যিনি সব কিছু জানেন
৪৭) পরমাত্মা- সব আত্মায় সর্বোচ্চ
৪৮) সোমসূর্যাগ্নিলোচন- চন্দ্র, সূর্য ও অগ্নিরূপী চোখ যাঁর
৪৯) হবি- আহূতি রূপী দ্রব্যের মতো
৫০) যজ্ঞময়- যজ্ঞস্বরূপ যিনি
৫১) সোম- উমা-সহ রূপ যাঁর
৫২) পঞ্চবক্ত্র- পঞ্চ মুখ যাঁর
৫৩) সদাশিব- নিত্য কল্যাণ রূপী
৫৪) বিশ্বেশ্বর- সমগ্র বিশ্বের ঈশ্বর
৫৫) বীরভদ্র- বীর হওয়া সত্ত্বেও শান্ত স্বরূপ যাঁর
৫৬) গণনাথ- গণদের স্বামী
৫৭) প্রজাপতি- প্রজার পালনকর্তা
৫৮) হিরণ্যরেতা- স্বর্ণ তেজ যাঁর
৫৯) দুর্ধর্ষ- কারও চাপের কাছে নত হন না যিনি
৬০) গিরীশ- পর্বতের স্বামী
৬১) গিরীশ্বর- কৈলাস পর্বতে শয়ন করেন যিনি
৬২) অনঘ- পাপরহিত
৬৩) ভুজঙ্গভূষণ- সাপের আভুষণ ধারণ করেন যিনি
৬৪) ভর্গ- পাপনাশক
৬৫) গিরিধন্বা- মেরু পর্বতকে যিনি ধনুক বানিয়েছেন
৬৬) গিরিপ্রিয়- পর্বত প্রেমী
৬৭) কৃত্তিবাসা- গজচর্ম পরিধান করেছেন যিনি
৬৮) পুরারাতি- পুরদের বিনাশ করেছেন যিনি
৬৯) ভগবান- সর্বসমর্থ ঐশ্বর্য সম্পন্ন
৭০) প্রমথাধিপ- প্রমথগণের অধিপতি
৭১) মৃত্যুঞ্জয়- মৃত্যুকে জয় করেছেন যিনি
৭২) সূক্ষ্মতনু- সূক্ষ্ম শরীর যাঁর
৭৩) জগদ্ব্যাপী- জগতে ব্যাপ্ত বাস যাঁর
৭৪) জগদ্গুরু- জগতের গুরু
৭৫) ব্যোমকেশ- আকাশের মতো চুল যাঁর
৭৬) মহাসেনজনক- কার্তিকেয়র পিতা
৭৭) চারুবিক্রম- সুন্দর পরাক্রম যাঁর
৭৮) রুদ্র- ভয়ানক
৭৯ ভূতপতি- ভূতপ্রেত বা পঞ্চভূতের অধিপতি
৮০) স্থাণু- স্পন্দন বিহিন কূটস্থ রূপ যাঁর
৮১) অহির্বুধ্ন্য- কুণ্ডলিনী ধারণ করেছেন যিনি
৮২) দিগম্বর- নগ্ন, আকাশরূপী বস্ত্র ধারণকারী
৮৩) অষ্টমূর্তি- আটটি রূপ আছে যাঁর
৮৪) অনেকাত্মা- অনেক রূপ ধারণ করতে পারেন যিনি
৮৫) সাত্বিক- সত্ব গুণ যাঁর
৮৬) শুদ্ধবিগ্রহ- শুদ্ধমূর্তি যাঁর
৮৭) শাশ্বত- নিত্য থাকেন যিনি
৮৮) খণ্ডপরশু- ভাঙা পরশু ধারণ করেছেন যিনি
৮৯) অজ- জন্ম রহিত
৯০) পাশবিমোচন- বন্ধন থেকে মুক্ত করেন যিনি
৯১) মৃড- সুখস্বরূপ যাঁর
৯২) পশুপতি- পশুদের অধিপতি
৯৩) দেব- স্বয়ং প্রকাশরূপ যিনি
৯৪) মহাদেব- দেবতাদেরও দেবতা
৯৫) অব্যয়- খরচ হওয়া সত্ত্বেও ঘাটতি হয় না যাঁর
৯৬) হরি- বিষ্ণুস্বরূপ
৯৭) পূষদন্তভিৎ- পূষার দন্ত যিনি উপড়ে ফেলেছিলেন
৯৮) অব্যগ্র- কখনও ব্যথিত হন না যিনি
৯৯) দক্ষাধ্বরহর- দক্ষের যজ্ঞ নষ্ট করেছিলেন যিনি
১০০) হর- পাপ ও তাপ হরণ করেন যিনি
১০১) ভগনেত্রভিদ্- ভগ দেবতার চোখ নষ্ট করেছিলেন যিনি
১০২) অব্যক্ত- ইন্দ্রিয়ের সামনে প্রকট হন না যিনি
১০৩) সহস্রাক্ষ- হাজারটি চোখ যাঁর
১০৪) সহস্রপাদ- হাজার পদ বিশিষ্ট
১০৫) অপবর্গপ্রদ- কৈবল্য মোক্ষ দান করেন যিনি
১০৬) অনন্ত- দেশকালবস্তু রূপী পরিছেদ রহিত
১০৭) তারক- সবার তারণ করেন যিনি
১০৮) পরমেশ্বর- সর্বাধিক পরম ঈশ্বর
শ্রাবণ মাস, শ্রাবণ সোমবার, প্রদোষ, শিবরাত্রি অথবা অন্যান্য সাধারণ সোমবারে এই নাম স্মরণ করলে সহজেই শিবের আশীর্বাদ লাভ করা যায়।
ভোলেনাথকে প্রসন্ন করার জন্য, এটি একটি সহজ-সরল উপায়।
.
ॐ নমঃ শিবায়
.
(সংগৃহীত)

কাল ভৈরব

আজ কালভৈরব দেবাবির্ভাব অষ্টমী। কৃষ্ণপক্ষের এই অষ্টমী তিথি কালভৈরব অষ্টমী হিসেবে পালন করা হয়। এইদিনে মহাদেব কালভৈরব রূপ ধারন করেন। কালভৈরব দেবতা শিবের একটি হিংস্র প্রকাশ বা রুদ্র অবতার, যা মৃত্যু এবং বিনাশের সাথে সম্পর্কিত।
শিব পুরাণে শিবের এই রূপের বিষয়ে বর্ণণা করা হয়েছে। পুরাণ মতে, কালভৈরব কাল বা সময়ের শাসক। প্রতিটি মন্দিরেই কালভৈরবের মূর্তি থাকে। তিনি সেই মন্দিরের রক্ষক হিসেবে বিবেচিত হন। শিব মন্দিরে কালভৈরব এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। তিনি ওই মন্দিরের চাবির রক্ষক বলে গণ্য হন।
দেবাদিদেব মহাদেবের অনেক রুদ্র অবতার আছে। দৈত্য দানব ও অশুভশক্তির বিনাশ হেতু ভগবান জটাধর বিভিন্ন রুদ্ররূপের ব্যাপ্তি ঘটিয়েছেন। ভগবান মহাদেবের রুদ্রাবতার অতীব ভয়ঙ্কর এবং মহাবিনাশক। ভগবান শিবশঙ্কর যখনই রুদ্ররূপ ধারণ করেছেন ত্রিলোক কোনও না কোনও দ্বিধায় পড়েছে, কিন্তু পরবর্তীকালে ধরিত্রী পেয়েছে নবপরিচয়। যা একমাত্র মহাকালের লীলাতেই সম্ভব ছিল। ঠিক যেমন অনলে দগ্ধ হয়ে স্বর্ণ হয় শুদ্ধ, ঠিক তেমনই মহারুদ্রের ক্রোধাগ্নিতে দগ্ধ হয়ে ধরিত্রী হয়েছে শিবভস্ম যা থেকে পরবর্তীতে অঙ্কুরিত হয়েছে শুদ্ধ পবিত্র জ্ঞানবৃক্ষ।
মহাদেব শিবের যতরকম রুদ্র অবতার আছে তন্মধ্যে অন্যতম একটি অবতার হলো কালভৈরব। কাল শব্দের অর্থ ‘মৃত্যু’ আর ভৈরব শব্দের অর্থ ‘ছন্দ’ অর্থাৎ কালভৈরব শব্দের অর্থ মৃত্যুরদেবতা বা কালবিনাশক।
কথিত আছে ব্রহ্মার পঞ্চম মস্তক যা সমূহপাপে আক্রান্ত সেই পাপ ও মস্তক বিনাশ হেতু মহাদেবের নীলতেজ হতে কালভৈরবের আবির্ভাব।
তন্ত্রশাস্ত্র মতে, বৈদিক দেব-দেবীদের প্রভাব কলিযুগে অস্তমিত হবে। প্রধান দেবতা হিসেবে আবির্ভূত হবেন ভৈরবরা।
মহাজগতের বিশেষ স্থানগুলি ভৈরব রক্ষা করেন। ভৈরবের মোট সংখ্য ৬৪। তাদের ৮টি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়। প্রতিটি শ্রেণির আবার একজন করে প্রধান ভৈরব রয়েছেন। প্রধান ৮ ভৈরবকে ‘অষ্টাঙ্গ ভৈরব’ বলা হয়। অষ্টাঙ্গ ভৈরবের নামগুলি এই প্রকার- অসিতাঙ্গ ভৈরব, রুরু ভৈরব, চণ্ড ভৈরব, ক্রোধ ভৈরব, উন্মত্ত ভৈরব, কপাল ভৈরব, ভীষণ ভৈরব ও সংহার ভৈরব। এই আটজন মহাবিশ্বের আটটি দিকের অধিপতি। এই আট জন আবার নিয়ন্ত্রিত হন মহাস্বর্ণকালভৈরবের দ্বারা। তিনিই সাধারণভাবে কালভৈরব নামে পরিচিত।
ভৈরবদের মহিমা অনেকটাই গুপ্ত। প্রত্যেক ভৈরবের একজন করে ভৈরবী থাকেন। ৬৪ ভৈরব ও তাদের সঙ্গিনী ৬৪ যোগিনী তন্ত্রমতে বিবিধ শক্তির আধার। ভৈরবরা সুপ্ত এবং দূরবর্তী। ভৈরবীরা সক্রিয়। বিভিন্ন পূজা, উপচার ইত্যাদির মাধ্যমে ভৈরবীশক্তিকে তুষ্ট করে ভৈরবের প্রসাদ লাভ করতে হয়। এই সাধনধারা দীর্ঘ দীর্ঘ কাল ধরে চলে আসছে।
কালী পূজার সময় কালভৈরব রূপে মহাকাল রূপী শিবের পূজা করা হয়। তন্ত্রসাধক মহাকাল কে সাধনায় সন্তুষ্ট করে অলৌকিক শক্তির অধিকারী হয়।
মহাকাল ভৈরবের প্রণাম মন্ত্র —
ॐ মহাকালং যজেদব্যং দক্ষিণে ধূমবর্ণকম।
বিভ্রতং দন্ড খটাঙ্গৌ দংস্ট্রাভীমমূখম্ শিশুম্॥
ব্যাঘ্রচর্মাবৃতকটীং তূন্দীলং রক্তবাসসম্।
ত্রিনেত্রমূর্ধং কেশঞ্চ মুণ্ডমালা বিভূষিতম্।
জটাভার লসচ্চচন্দ্র খন্ডমুগ্রং জলন্নিভম্॥
.
হর হর মহাদেব
.
(সংগৃহীত)